সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে শূন্য আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন ৬জন প্রার্থী।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম সেলিম পারভেজ ও যুবলীগ নেতা সুশীল চন্দ্র সরকার। জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফারুক আলম সরকার ও সাঘাটা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জুর নামও শোনা যাচ্ছে।
প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে তার বাবার সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার সম্মানে তাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন।
তিনি বলেন, ফুলছড়িতে তার শ্বশুরবাড়ি, সাঘাটায় বাবার বাড়ি। নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার ভোটার তার আত্মীয়স্বজন। তাই নির্বাচনে তিনি বাড়তি সুবিধা পাবেন।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। তার নেতৃত্বে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো অনেক সুসংগঠিত। ফলে তার নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে বিচ্ছিন্ন ও ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে নবউদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তিনি মূল ধারার নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ ও এলাকার মানুষের সেবা করছেন।
মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন। আর নির্বাচিত হলে প্রথমেই উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বাড়াতে বালাসী-বাহাদুরাবাদ টার্নেল নির্মাণে উদ্যোগী হবেন।
ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ি রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা থাকবে। বালাসী থেকে বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত র্টানেল নির্মাণে সরকারকে উৎসাহী করা, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দ্রুত ও সহজ যোগাযোগে বিকল্প সড়ক নির্মাণ এবং কৃষি-কৃষকের আধুনিকায়নে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
সেই সঙ্গে গাইবান্ধা শহর থেকে সোনাতলা হয়ে মোকামতলা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ এবং বোনারপাড়া রেলজংশন আধুনিকায়নসহ দুই উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন জি এম সেলিম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে দু'বার দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন এবং এবার দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সুশীল চন্দ্র সরকার জানান, দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আনা এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে তিনি দলের মনোনয়ন চান।
বিএনপি নেতা ফারুক আলম সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, তাহলে তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রার্থী হবেন। তবে সংশয় তো থেকেই যায়। সুষ্ঠু ভোট তো হবে না। সারা মাস ঠিক থাকবে, ভোটের আগের রাতে সব শেষ করে ভোট মেরে নেবে বলেন তিনি।
এ আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করেছেন অ্যাডভোকেট এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ভোট নিয়ে সংশয় আছে। তা ছাড়া ইভিএমে ভোট হলে পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, সেটাও বিবেচ্য বিষয়। তবে পার্টির সিদ্ধান্ত হলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন এবং বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করেন রঞ্জু।