জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন। এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দু’টি সংগঠনের তিনজন করে মোট তিনটি পক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তবে নির্বাচনে বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করছেন না।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলে অনুষ্ঠিতব্য বিশেষ সিনেট সভায় এ নির্বাচন হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ না থাকায় সিনেটে পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধির পদ শূন্য, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি অবসরে, একজন প্রেষণে কোষাধ্যক্ষ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) সাময়িক উপাচার্যের দায়িত্বে, এক শিক্ষকের বিদেশে অবস্থান, একজন শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত, একজন কলেজ অধ্যক্ষ অবসরে এবং একজন মনোনীত গবেষক পদ শূন্য। ফলে বর্তমানে ৮১ জন সিনেটর উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে বৈধ ভোটার বলে বিবেচিত হবেন।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি না থাকাটা হতাশাজনক। দীর্ঘদিন জাকসু না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা যায়, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের নেতৃত্বে একটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। এ প্যানেলের অন্য দু’জন হলেন- বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ্।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক হানিফ আলী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. খালিদ কুদ্দুসের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল্লাহ হেল কাফীর নেতৃত্বে একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্যানেলের অন্য দু’জন হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন এবং সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তপন কুমার সাহা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের আরেক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর ব্যানারে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উপ-উপাচার্য ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আমির হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ প্যানেলের অন্য দু’জন হলেন- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা।
এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এম এ মতিন নির্বাচনে তিনজনের একটি দল নিয়ে অংশ নেওয়ার ‘সম্ভাবনার’ কথা জানিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘সিনেট সভায় একজন প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর মাধ্যমে প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়া যাবে। সভায় নির্দিষ্ট সময় প্রচারণার জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। পরে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে মোট ৮১ জন সিনেটর তাদের ভোট প্রদান করবেন।’
