বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিদ্যালয়ের উন্নয়নের টাকায় সভাপতির ভুড়িভোজের আয়োজন!

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২২, ১৯:৫০

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকায় ভুড়ি ভোজের আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে খামার বড়ধুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা গেছে, ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি ক্ষুদ্র মেরামত ও উপকরণ ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত সরকারি অনুদানের পৌনে তিন লাখ টাকা নয়ছয় করে হালাল করতে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের জন্য ভুড়িভোজের আয়োজন করেন। সোমবার দুপুরে সভাপতি তার নিজ বাড়িতে এই ভুড়িভোজের আয়োজন করেন। 

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে উপজেলার ঝৌল ইউনিয়নের ১৪ নং খামার বড়ধুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত ও উপকরণ ক্রয়ের জন্য সরকারিভাবে দুই লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা এককালীন অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হয়। অনুদানের এই টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়ার পর সভাপতি আব্দুস সবুর খান প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষকরে স্বাক্ষর নিয়ে সম্পূর্ণ টাকার চেক নিজ নামে লিখে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। পরে সেই টাকায় বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ না করে যেনোতেনোভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসে ভাউচার দাখিল করে খরচ দেখান। 

অভিযোগে আরও জানা যায়, এই অনুদানের টাকা হজম করতে সভাপতি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ভুড়িভোজের আয়োজন করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বাধার মুখে তার নিজ বাড়িতে এই ভুড়িভোজের আয়োজন করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেই ভোজে অংশ গ্রহণ না করলেও বিদ্যালয়ের অন্যান্য সকল সহকারি শিক্ষক সহ প্রায় ৫০/৬০ লোক এতে অংশ নেন। 

দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীরা এ বিষয়ে সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে আব্দুস সবুর খান কিরণ তাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। এসময় তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকার হিসাব সাংবাদিকদের জানার অধিকার নাই। তাছাড়া অনুদানের টাকায় যে সব কাজ করা হয়েছে তা প্রধান শিক্ষকসহ সকলের জানা আছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মেহেরুন্নেছা খাতুন বলেন, ক্ষুদ্র মেরামত ও উপকরণ ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত সরকারি অনুদানের পৌনে তিন লাখ টাকা আমাকে চাপ দিয়ে চেকে স্বাক্ষর নিয়ে সভাপতি নিজ দায়িত্বে উত্তোলন করেছেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে খরচ না করে এই টাকা দিয়ে তিনি কি করেছেন তার হিসাব তিনিই দিতে পারবেন। ভুড়িভোজের বিষয়ে না করার পরও সভাপতি আমার কথা শোনেন নি। বিধি অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বেই অনুদানের টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। সভাপতি কাজের তদারকি করবেন। তিনি কোন আইনেই নিজে এই টাকা উত্তোলন করতে পারেন না।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সন্ধ্যা রানী সাহা জানান, সভাপতি বেআইনিভাবে তাকে চাপ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা উত্তোলন করে থাকলে প্রধান শিক্ষক কেন বিষয়টি আমাদেরকে জানাননি। উন্নয়ন কাজের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের কি কাজ করা হয়েছে পরিদর্শন শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।##  

 

ইত্তেফাক/জেডএইচডি