চট্টগ্রামে এক প্রবাসীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম নার্গিস আক্তারের আদালতে এ সংক্রান্ত শুনানি শেষে অভিযোগ গ্রহণ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
মামলার আসামিরা হলেন—মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলাম রতন, আবু নাসের চৌধুরী আজাদ, এ কে এম নাজমুল আহসান, মো. ইদ্রিস মিয়া ও মো. ইমরান হোসেন জিয়া। এদের মধ্যে নাজমুল আহসান, ইদ্রিস মিয়া ও ইমরান হোসেন পলাতক রয়েছেন। অতিরিক্ত মহানগর পিপি তসলিম উদ্দিন ইত্তেফাককে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তবে পিপি গতকাল সন্ধ্যায় ইত্তেফাককে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও বাদীর সঙ্গে আসামি পক্ষের আপস হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাই বাদী এই মামলা তুলে নিতে রাজি হয়েছেন। চট্টগ্রামের এক সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে আপস হয়েছে। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে বাদী আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করবেন বলে তিনি জানান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, নগরীর পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী বন্ধন নাথ তার মালিকানাধীন জমি উন্নয়নের জন্য ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ডিজাইন সোর্স লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এই ঘটনায় স্থানীয় কতিপয় সন্ত্রাসী তার কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় তাকে ও পরিবারের সদস্যদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বন্ধন নাথ চাঁদা দিতে অস্বীকার করে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের কাছে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাকে প্রচণ্ড মারধর করে। এজাহারে উল্লেখিত ১ নম্বর আসামি এ কে এম নাজমুল আহসান বন্ধন নাথের পিঠে গুলি করে। পরবর্তী সময়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের জীবন রক্ষায় তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ৭০ লাখ টাকা চাঁদা প্রদান করেন। পরে ঐ ছয় জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো দুই/তিন জনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পাঁচলাইশ থানা। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।