বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কেরানীগঞ্জে রাজউকের অনুমতি ছাড়াই ৮০ আবাসন প্রকল্প

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২২, ০৩:০২

কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে শুভাঢ্যা, শাক্তা, তারানগর, তেঘুরিয়া, বাস্তা, কোন্ডা ও রোহিতপুরসহ ১০ ইউনিয়নে রাজউক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই গড়ে উঠেছে প্রায় ৮০টি অবৈধ আবাসন প্রকল্প। এর মধ্যে শরিফ হাউজিং লিমিটেড ও মধু সিটি বাস্তা খাল, বোয়ালী খাল, জয়নগর ও ঘাটারচর, রোহিতপুর এবং তারানগর এলাকায় ১১টি খাল, কৃষিজমি ও সরকারি রাস্তা দখল করেছে। ইতিমধ্যে ঐ ১১টি খাল আবাসন প্রকল্পের মালিকরা বালি ভরাট করে বিক্রির জন্য প্লট তৈরি করেছে।

খাল ভরাট ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ ও ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা নাহারসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে এক আলোচনায় খাল দখলের অভিযোগে শরিফ হাউজিংয়ের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

খাল ভরাট করে আবাসন প্রকল্পে ভবন তৈরি করায় জড়িত মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে শাস্তি দেওয়ার জন্য ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তা ছাড়া বুড়িগঙ্গা নদীতে ময়লা আবর্জনা ও কারখানার বর্জ্য ফেলে পানি এবং পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আগানগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশি, সাকুর হোসেন সাকু ও হাবিবুর রহমান হাবিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, ‘নদী ও খাল পরিবেশকে সুন্দর রাখে। নদী আমাদের মা। তাই নদী ও খাল দখলকারী হাউজিং মালিকদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধার করা হবে। পরে নদী কমিশন চেয়ারম্যান কেরানীগঞ্জ পরিদর্শন শেষে ফতুল্লা এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানা পিলার স্থাপন কাজ পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শরিফ হাউজিং, সবুজ ছায়া, মধু সিটি, মডার্ন সিটি, গোল্ডেন সিটি, নিউ ভিশন, সাউথ টাউন, সুমনা হাউজিং, বামনশুর মডেল টাউন, মিলেনিয়াম সিটি ও আটি বাজার মডেল টাউনসহ প্রায় ৮০টি হাউজিং কোম্পানি রাজউক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো প্রকার ছাড়পত্র না নিয়েই কেরানীগঞ্জের শত শত হেক্টর কৃষিজমি ও খাল ভরাট করে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান জানান, ‘হাউজিং মালিকদের পেশি-শক্তির কারণে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠিন কোনো ব্যবস্থা বা নিয়মিত মামলা দিতে পারছি না। তবে প্রতি মাসে দুই থেকে তিনটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থ জরিমানা করে থাকি। ’

ইত্তেফাক/ইআ