হাতের কাছে কলম কিংবা পেন্সিল পেলেই হিজিবিজি আকিবুকি করেন? মনের অজান্তে এসব চিত্রকর্মের প্রায়শই কোনো অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে একমত নাও হতে পারেন। অনেক সময় এসব ছবির কিছু অর্থ থাকতে পারে। অনেক সময় মনোবিদদের দেখা যায় এসব উদ্ভট চিত্র মনোযোগ দিয়ে বিচার করতে। কারণ ওই ব্যক্তির মানসিক অবস্থা যাচাইয়ে এই আঁকিবুকি সাহায্য করে।
হিজিবিজি আঁকার অভ্যাসকেই বলা হয় ডুডল। গুগল থেকে আপনারা অনেকেই ডুডল শব্দের সঙ্গে পরিচিত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিন কিংবা ব্যক্তির স্মরণে গুগলে ডুগল প্রকাশ হয়। এমনকি প্রতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর ডুডল ডে পালিত হয়।
ডুডল ডে কেন পালিত হয়?
যোগাযোগের জন্যে বহু বছর ধরেই মানুষ ডুডল ব্যবহার করছে। প্রাগৈহাসিক সময়ের গুহার দিকেই তাকিয়ে দেখুন। বিজ্ঞানীরা এসব ডুডল থেকেই নানা তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। অনেকে তো বিশ্বাস করেন শিল্পকর্ম হিসেবে প্রতিটি যুগেই ডুডলের গ্রহনযোগ্যতা ছিল। আমেরিকার প্রাক বিপ্লবী যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ কিছু অফিসার মিলে 'ইয়াঙ্কি ডুডল' নামে একটি গান রচনা করে। মূলত আমেরিকান সৈন্যদের উপহাস করতেই এমন গান বানানো হয়। তখন ডুডল বলতে বোকা বোঝানো হতো।
মার্কিনরা এই উপহাসকেই নিজের করে নিয়েছিল। সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হিসেবে এর অর্থ এখন 'কিছু না করা।' বিশ শতকেই অনুপস্থিত মন সম্পর্কে কথা বলার জন্যে ডুডলের জনপ্রিয়তা পায়। সেই থেকে অবচেতন মনের অধ্যয়নে ডুডলের গবেষনা গুরুত্বের সঙ্গেই নেওয়া হয়।
তাহলে হিজিবিজি আঁকা কেন ভালো? চলুন জেনে নেই:
মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে
অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা। আজকাল অমনোযোগী হয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে মনোযোগ ধরে রাখা ও মস্তিস্ককে ব্যস্ত রাখার কৌশল হিসেবে ডুডলের অনুশীলন আপনার জন্যে উপকারি।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
আপনি অলস থাকলে আপনার মস্তিস্ক ডিফল্ট মোডে থাকে। এই কারণেই আপনি ঝিমুতে থাকেন বা আলস্য ভর করে। ডুডলিং আপনার মস্তিস্ককে ঘুমিয়ে পড়া থেকে বিরত রাখে এবং বাড়তি স্নায়ুচাপ তৈরি করে না। এভাবে স্মৃতিশক্তি ও সৃজনশীলতা বাড়ে।
হতাশা কাটাতে
হতাশ হলে অনেক সময় মনের অনুভূতি শব্দে বা ভাষায় প্রকাশ না করা গেলেও হিজিবিজি রেখায় তা করা সম্ভব। হয়তো অবচেতন মনেই কোনো চিত্র আছে যা আপনায় বিষন্ন করে তোলে। সেই চিত্রই হিজিবিজি একে দেখুন।
শেখার মনোভাব বাড়ে
ডুডলিং করতে গেলে অন্তত অনেকেরই শেখার মনোভাব বাড়ে। আপনি আপনার নিজের বোধগম্য শর্টনোট বানাতে পারেন। এতে কোনোকিছু দ্রুত শেখার পথ সুগম হয়।
মেজাজ উন্নত করতে
একটি গবেষণায় জানা গেছে ডুডলিং আপনাকে সুখী করতে পারে। খুশিমতো কোনোকিছু আঁকলে তা মেজাজ ভালো করে।