শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কয়েন কিনতে ব্যবসায়ী খোয়ালেন ৭৫ লাখ টাকা

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:৩২

কথিত ম্যাগনেটিক কয়েন ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় সূত্রে নিজেও কথিত অতি মূল্যবান সেই কয়েন কিনতে আকৃষ্ট হন এক ব্যবসায়ী। এমনকি কয়েন কিনতে ৭৫ লাখ টাকাও পরিশোধ করেন। টাকা দেওয়ার পর কয়েন আনতে বরিশাল গিয়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। কোনো উপায় না দেখে ঢাকায় ফিরে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ঐ ব্যবসায়ী।

মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় কথিত ম্যাগনেটিক কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের দায়ে প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে  গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) গুলশান বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মো. ইউসুফ আলী, মো. খবির চৌকিদার, মো. শামীম, মো. নাসির উদ্দিন আকন ও মো. জসিম গাজী।

শনিবার  রাজধানীর ধানমন্ডি লেকপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে কথিত ১০টি ম্যাগনেটিক কয়েন উদ্ধার করা হয়।

ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, ভিকটিম ব্যবসায়ীর কারওয়ান বাজারে পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে কয়েক জন ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীর পরিচয় হয়। আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা ভিকটিমকে তাদের কাছে থাকা একটি কয়েনের কথা বলে, যা কিনে দেশে বা বিদেশে বিক্রি করলে অনেক টাকার মালিক হতে পারবে।

ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য মিন্টু নামে এক ব্যক্তি বিনিয়োগ করেছেন যার সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিকটিম খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ এলাকায় যান। সেখানে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ নামে এক ব্যাক্তির সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীরা।

এ সময় ইউসুফ ভিকটিমকে ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য উত্সাহিত করেন। ইউসুফ সাহেব ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায়  এবং ম্যাগনেট কয়েন সম্পর্কে তার ধারণা থাকায় ভিকটিম তার কথা বিশ্বাস করেন। গত ২৮ আগস্ট ভিকটিম একপর্যায়ে মিন্টুর দেওয়া ঠিকানায় কথিত ম্যাগনেট কয়েন কেনার জন্য নগদ ৭৫ লাখ টাকা ইউসুফ আলী, খবির চৌকিদার, শামীম, নাছির, জসিম ওরফে জুয়েলদের দেন।

টাকা দেওয়ার তিন-চার দিন পর ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ফোন করে ভিকটিমকে জানায়, কয়েক দিনের মধ্যে তাদের বরিশাল যেতে হবে। গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রাইভেটকারে করে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফসহ ভিকটিম বরিশাল যান। সেখানে তারা একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন এবং ফোনে ইঞ্জিনিয়ার ম্যাগনেট কয়েন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তারা কথিত ম্যাগনেট কয়েন নিয়ে আসব, আসতেছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর  সকালে ভিকটিমকে হোটেলে রেখে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ম্যাগনেট কয়েনদের মালিকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে ভিকটিম বারবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

তখন ভিকটিম বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর ভিকটিম বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পাঁচ জনকে  গ্রেফতার করা হয়। ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারক চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের  গ্রেফতার অভিযান অব্যহত রয়েছে। খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা মামলায় পাঁচ জনকে  গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ইত্তেফাক/ইআ