সোনা পাচার রোধে যশোরের বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তে বিজিবি রয়েছে কঠোর অবস্থানে। এসব সীমান্ত এলাকা থেকে একের পর এক ধরা পড়ছে সোনার বার। সেই সঙ্গে আটক করা হচ্ছে সোনা বহনকারীদেরও। তবে মূল পাচারকারী গডফাদাররা থেকে যাচ্ছে পর্দার আড়ালে। সীমান্তে পাচারকালে ধরা পড়াদের অধিকাংশই বাহক। গত ২৯ দিনে বেনাপোল ও শার্শা সীমান্ত থেকে জব্দ করা হয়েছে ১৫ কেজি ৯১৫ গ্রাম সোনা। এ সময় আটক করা হয়েছে ৯ জনকে।
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থান ও নজরদারি রয়েছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে একটি সোনার বারও যেন দেশের বাইরে পাচার না হয়, সেদিকে কঠোর নজর রাখছে বিজিবি।’ সোনা পাচারকারী গডফাদারদের ধরা না গেলেও তাদের সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান বলেন, ‘সোনা পাচারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও আস্তে আস্তে তাদের চালানগুলো জব্দ করে তাদের সর্বস্বান্ত করা হবে। তাদের আইনের আওতায় এনে সোনা চোরাচালান সীমান্ত থেকে নির্মূল করা হবে। সোনা পাচার রোধকল্পে সীমান্ত এলাকায় টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে এবং এ ধরনের কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করা হবে। সোনার চোরাচালান শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা থাকবে।’
সূত্র জানায়, গত ৩১ আগস্ট শার্শার রুদ্রপুর সীমান্ত থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার ৯ পিচ সোনার বার (২ কেজি ৩৩৩ গ্রাম) ও একটি মোটরসাইকেলসহ এক জনকে আটক করে বিজিবি। গত ৭ সেপ্টেম্বর খুলনা ব্যাটালিয়ন ২১ বিজিবির পুটখালী বিওপির একটি টহল দল বেনাপোল সীমান্তের ইছাপুর খালপাড় জামে মসজিদ এলাকা থেকে ৮৬ লাখ ২০ হাজার টাকার ১ কেজি ১৬৬ গ্রাম (১০০ ভরি) ওজনের ১০ পিস সোনার বার ও একটি মোটরবাইক জব্দ করা হয়। এ সময় দুই জনকে আটক করা হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর বেনাপোল পোর্ট থানার বালুণ্ডা বাজার এলাকা থেকে ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ৩০ পিচ (৩ কেজি ৪৯৮ গ্রাম ওজনের, ৩০১ ভরি) সোনার বারসহ এক জনকে আটক করে ২১ বিজিবি। ১৭ সেপ্টেম্বর পুটখালী-বালুণ্ডা সড়ক এলাকা থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার ২০টি সোনার (ওজন ২ কেজি ৩৩৩ গ্রাম) বারসহ আরো এক জনকে আটক করে ২১ বিজিবি সদস্যরা।
গত ২০ সেপ্টেম্বর গোগা বাজারের উত্তর পাশে একটি ইট ভাটার কাছে পাকা রাস্তার ওপর থেকে ১৫ পিচ সোনার বার (১ কেজি ৬৫২ গ্রাম) ও একটি মোটরসাইকেলসহ পুটখালী গ্রামের জালাল উদ্দিনকে আটক করে ২১ বিজিবি সদস্যরা। যার মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ২৭ সেপ্টেম্বর কয়েকটি চালান ধরা পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে রুদ্রপুর সীমান্তের আজগর আলীর আমবাগান থেকে ভারতে পাচারের সময় ৮৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকার ১০ পিস (১ কেজি ২৩৩ গ্রাম) সোনার বার ও পুটখালী সীমান্ত এলাকা থেকে প্রাইভেট কার তল্লাশি করে ৭৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকার এক পিচ সোনার বারসহ (১ কেজি ৬০ গ্রাম ওজনের) দুই জনকে আটক করে ২১ বিজিবি সদস্যরা। বেনাপোল পোর্ট থানার মালিপুতা গ্রাম থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ১৮ পিস সোনার বার (২ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের) জব্দ করে ৪৯ বিজিবি সদস্যরা।