‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী’- মা দুর্গার আগমন এখন আর বাংলাতেই সীমাবদ্ধ নেই। সুদূর বাংলা ছাড়িয়ে এখন সম্রাট নেপোলিয়নের শহর প্যারিসেও আগমন ঘটেছে দুর্গা মায়ের।
সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে প্যারিসে বাংলাদেশের পূজা মণ্ডপের মতো মাটির প্রতিমা স্থাপন করে পূজা অর্চনা হয় না। মেলে না সরকারি ছুটিও। কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রবাসীদের মধ্যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা কিংবা নান্দনিকতা, উৎসাহ-উদ্দীপনার কোনো কমতি নেই।
ফ্রান্সে বসবাসকারী সাড়ে ৭/৮ হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বর্ণাঢ্য আয়োজনে দুর্গাপূজা উদযাপন করেছেন। দেবী দুর্গার চক্ষুদান, দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নান, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধুপ দিয়ে পূজার আচার সম্পন্ন হয়।
পূজার সন্ধ্যায় প্রতিদিনই মণ্ডপগুলোতে ভক্তিমূলক গান ও আরতিসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই উদযাপনের মধ্য দিয়েই নিজেদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সভ্যতার চর্চা করছেন তারা। একই সঙ্গে নিজের শেকড়কে প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মকে জানান দিচ্ছেন প্রবাসীরা।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ব্যানারে প্যারিসে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ব প্রথম দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৫ সালে প্যারিসে পাঁচটি মণ্ডপে পূজা উদযাপিত হয়।
এবার প্যারিসে বাংলাদেশ হিন্দু সেবা সংঘ, সনাতনী গীতা সংঘসহ মোট ১৪টি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে ৫ দিনব্যাপী পূজা উদযাপন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ বলেন, প্যারিসে প্রায় সাড়ে ৭/৮ হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন পূজা উদযাপন করছেন। পাশাপাশি প্রবাসী বাঙালিরাও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীন এই উৎসবে মেতে উঠেছেন।
তিনি আরও বলেন, এতে প্রবাসে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় হচ্ছে।
এদিকে প্যারিসের পূজা মণ্ডপগুলো পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ। তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রভাত সরকার, সুমন মল্লিক, কৃষ্ণবাগচী, রতন সাহাসহ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।