নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে পাটপণ্যের ব্যবহার কমেছে। তার জায়গা নিয়েছে পলিথিন বা অপচনশীল পণ্য। এসব পণ্য ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তা কার্যকর হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে জরিমানা করলেও থামছে না প্লাস্টিক ও পলিথিনের অবাধ ব্যবহার। এতে একদিকে যেমন পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে; অন্যদিকে কৃষকরা দাম না পাওয়ায় পাটের চাষ কমিয়ে দিচ্ছে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাল, গম, চোকর, ভুসি, চিনি, আটা, ময়দা, সুজি, ডাল, রসুন, পেঁয়াজ প্রভৃতি কাজে পলিথিনের বস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে। সমাজসচেতন ব্যক্তিরা অভিযোগ করে জানান, শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে পলিথিনের ব্যাগ ও বস্তা তৈরি হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জেনেও মানুষ পলিথিন ব্যবহার করছেন। এতে পাটের পণ্যের চাহিদাও শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। জানা যায়, একসময় সৈয়দপুরের প্রতিটি বাড়িতে পাটজাত পণ্যসামগ্রী পাওয়া যেত। খড়ের ঘর বাঁধার প্রয়োজনে পাটের রশির ব্যবহার ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এছাড়া চটের মাদুরের ব্যবহার ছিল। নানা রঙের পাপোশ তো আছেই। কিন্তু পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে গ্রাম-বাংলার এসব ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। কেউ আর মেহমান এলে পাটের তৈরি নানা রঙের মাদুর পেতে দেয় না। ধান মজুতের জন্যও কেউ আর পাটের বস্তা ব্যবহার করে না।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আশি বছরের তফিল উদ্দিন বলেন, বাজার করার প্রয়োজনে পূর্বে পাটের তৈরি সুন্দর সুন্দর ব্যাগ পাওয়া যেত। ধান-চাল মজুতের প্রয়োজনে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করতাম। এখন প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলে সেসব হারিয়ে গেছে। কৃষক তোফাজ্জল হোসেন জানান, আগে পাটের জন্য আলাদা করে জমি তৈরি করে রেখে দিতাম। কারণ পাটের মূল্য ছিল। এখন কোনো জমিই পাট চাষের জন্য ব্যবহার করি না। তাছাড়া পাটের চাষে ব্যয়ের তুলনায় আয় কম। যেটুকু আবাদ করা হয়, পাট শুধু জ্বালানির জন্য। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। তবে ইতিমধ্যেই বাজারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। খুব শিগিগরই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।