বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সিলেটে বিশুদ্ধ পানির সংকট, ভোগান্তিতে নগরবাসী

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৫৯

সিলেট নগরীতে জনসংখ্যা বাড়ছেই। বাড়ছে বাড়িঘরের সংখ্যা। এতে বিশুদ্ধ পানির চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। নগরীতে প্রতিদিন সাড়ে ৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। অথচ চাহিদা ৮ কোটি লিটার।

২০১৪ সালে সিলেটের সারি নদীর প্রবাহে চেঙ্গেরখালে একটি ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিসিক। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮০৮ কোটি টাকা। কিন্তু সেই ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। অথচ বছরের পর বছর ভোগান্তিতে আছেন নগরবাসী।

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পানির চাহিদার কথা বিবেচনা করে নতুন করে ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। শহরতলির বড়শালায় ১৩ একর জায়গা অধিগ্রহণসহ প্ল্যান্ট নির্মাণে ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রকল্পের জন্য ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেন। কিন্তু, প্রক্রিয়া গ্রহণের আট বছরেও এই প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মেয়র আরিফ। তিনি বলেন, বড়শালা ছাড়াও দক্ষিণ সুরমায় আরেকটি ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বুধবার সন্ধ্যায় ইত্তেফাককে বলেন, ৫ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সংকট আপাতত সমাধান হতো।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ২০১৪ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কুশিঘাটে ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট বাস্তবায়ন করে। এই প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে। বাকি ৫ কোটি লিটার পানি তোপখানা পানি সরবরাহ প্রকল্প ও অন্যান্য উৎপাদক নলকূপ থেকে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু পানির চাহিদা পূরণ হয় না বিধায় বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে নগরীতে হাহাকার শুরু হয়।

সূত্র মতে, নগরীতে প্রতিদিন সাড়ে ৪/৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে সিসিক। বৈধ গ্রাহকদের পানির চাহিদা ৪ কোটি লিটার। কিন্তু অবৈধ সংযোগ ও অপচয়ের কারণে চাহিদার চেয়ে বেশি পানি সরবরাহ করেও সিসিক কূলকিনারা পাচ্ছে না।

সিসিক সূত্র জানায়, ১৪ সালে ২৭টি ওয়ার্ডের জনগণের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এই প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে সিসিকের ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২টি। পানির চাহিদাও আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু, পানির উৎপাদন ক্ষমতা সেভাবে বাড়েনি। অনেকটা বাধ্য হয়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করে সাময়িকভাবে এই সমস্যাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে আবার অনেকেই মনে করছেন, ভূমিকম্পের রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত সিলেট নগরীতে অধিক সংখ্যক উৎপাদক নলকূপ স্থাপন বিপজ্জনক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেট নগরীর পানির স্তরও ক্রমশই নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই, বাইরের পানিকে কাজে লাগিয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখাই উত্তম ।

ইত্তেফাক/ইআ