ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শোপিসের বিকল্প নেই। তাই পুঁতি-পাথরের তৈরি শোপিসের সবচেয়ে বেশি চাহিদা। সেই পুঁতি পাথরের নানা ধরনের শোপিস তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর গ্রামের দরিদ্র নারী উদ্যোক্তা হাজেরা বেগম।
কদিন আগেও স্বামীহারা এ অসহায় নারী দরিদ্র বাবার বাড়িতে একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতেন। এখন তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন নিজের একটি কারখানা ও বিক্রয় কেন্দ্রের।
হাজেরা বেগম বলেন, ৪ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর পারিবারিক সমস্যার কারণে ছাড়তে হয় স্বামী বাড়ি। আশ্রয় মেলে দরিদ্র বাবার বাড়িতে। তার বাবা বেঁচে নেই। নেই কোনো ভাইও।
সংসারের খরচ ও মেয়ের লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। ঠিক সে সময় প্রতিবেশি এক নারীর মাধ্যমে ভর্তি হন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। সেখান থেকে ৩ মাসের ক্রিস্টাল শোপিস ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আত্মীয় স্বজনের সহায়তায় ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন পুঁতি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শোপিস তৈরির কাজ।
আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশিদের মাধ্যমে বাড়ি থেকেই বিক্রি শুরু করেন। কিছু দিনের মধ্যে তার তৈরি পণ্যের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এখন তার বিক্রি বেড়েছে। অনেকে অর্ডার দিয়ে চাহিদা মতো পণ্য তৈরি করে নিচ্ছেন।
মাসে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় করছেন হাজেরা। এই আয়ে তার মেয়ের লেখাপড়া খরচসহ সংসার পরিচালনা করছেন। তিনি তার ব্যবসাকে আরও প্রসারিত করতে চান। কিন্তু স্বল্প পুঁজিতে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করতে পারছেন না। তাই তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অল্প সুদে ঋণের দাবি জানান।
ঋণ সুবিধা পেলে তিনি একটি কারখানা ও বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে তুলবেন। সৃষ্টি করবেন এলাকার নারীদের কর্মসংস্থান।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোশাররত জাহান বলেন, হাজেরা বেগমের মতো নারীদের স্বাবলম্বী করতে বর্তমান সরকার মহিলাবিষয়ক অধিপ্তরের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ট্রেডে নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত ১৬টি ব্যাচে প্রায় ৭শ জন দরিদ্র অসহায় নারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ১৭তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলমান আছে। এদের মধ্যে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অফিস থেকে যতটুকু সম্ভব হাজেরাকে সহযোগিতা করা হবে।