শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

স্কুলশিক্ষার্থীকে পিটিয়ে টিকটক বানালো কিশোর গ্যাং

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৪৩

কিশোর গ্যাং দলের ৪ সদস্য এক স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে টিকটক করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল করেছে। এ ঘটনার দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও পুলিশ মামলা এন্ট্রি করেনি এবং কাউকে গ্রেফতার করেনি। বরং ধল্লা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আমজাদ হোসেন আসামি না ধরে বিষয়টি মিটমাট করার প্রস্তাব দিচ্ছে বলে শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন ঐ শিক্ষার্থী ও তার মা রোকসানা আক্তার (৪০)।

সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়ন কাউন্সিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী গান্দার দিয়া গ্রামের প্রবাসী বাবুল হোসেনের ছেলে ভুক্তভোগী গোলাম রাব্বি (১৬) বলেন, গত ১৩ অক্টোবর তার স্কুলের শিক্ষিকা ইয়াসমিন আক্তারের কাছে সকাল ১০টায় প্রাইভেট পড়ে স্কুল গেটের বাইরে বের হলে উত্তর ধল্লার মো. আক্তারের ছেলে নুরুউদ্দিন (১৮), শাহজাহানের ছেলে রবিউল (২০), ফরিদের ছেলে ফারদিন (১৮) ও তামিম (১৮) কথা আছে বলে তাকে ডেকে নেয়। এরপর তারা বলে তুই কেন থ্রেড দিলি। এ কথা বলেই তিন জন এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। তাদের একজন মারধরের বিষয়টি ক্যামেরায় ভিডিও করে। এরপর তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। এবং ভাইরাল করে। 

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গেছে রাব্বি বাচাঁও, বাঁচাও, বলছে আর তারা তাকে পেটাচ্ছে। আবার সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাম্পশো গান বাজছে এবং তারা আনন্দ উল্লাস করছে! 

রাব্বির মা রোকসানা আক্তার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ ভুইয়ার কাছে বিচার চাইলে সে থানায় যেতে বলেন। থানার ওসি গত ১৬ তারিখে অভিযোগটি সাক্ষর করে ধল্লা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমজাদকে মার্ক করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। তবে ঐ অভিযোগে টিকটকের কথাটি বাদ দিয়ে দেয় পুলিশ। ঘটনার দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও মামলা এন্ট্রি হয়নি। ফাঁড়ির এএসআই আমজাদ বাড়ি থাকা সত্ত্বেও একজন আসামিও গ্রেফতার করেনি। 

রোকসানা আক্তার আরও বলেন, ওসি বলছেন, মীমাংসা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু গ্রামের কেউ মীমাংসা করে দিচ্ছে না। পুলিশও আসামি ধরছে না। এদিকে এক আসামির পিতা শাহাজাহান হুমকি দিচ্ছে কেন থানা পুলিশ করলাম। বলছে আবার আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীকে মারধর ও টিকটক করে ফেসবুকে ভাইরাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এএসআই আমজাদ হোসেন বলেন, আমি তো আর মামলা করার এখতিয়ার রাখি না। ফাড়ির ইনচার্জ ছাড়া আসামি ধরতে পারি না। আমি মীমাংসা কথা বলিনি। তারাই শুক্রবার পুলিশ ফাঁড়িতে মীমংসা করতে চাইছে।

ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিক বলেন, ঐ শিক্ষার্থীর এসব ঘটনা সত্য। ঐ সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। এরা সবাই কিশোর গ্যাং। বয়স ১৬ থেকে ১৮ হবে। থানার ওসি এএসআই আমজাদকে নির্দেশ দিয়েছে আসামি গ্রেফতার করে মামলা নিতে। কেন এখনো করছে না আমি বুঝতে পারছি না। আসামিদের পিতা সবাই প্রবাসে থাকেন বলে অনেক টাকা পয়সা আছে। সেই কারণে হয়তো এএসআই আমজাদ আসামী গ্রেফতার করছে না। তবে দেখা যাক আজকে একজনকে ধরে ফেলব।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিজানুর রহমান বলেন, এরা সবাই এলাকার বখটে কিশোর গ্যাং। একজন বাদে বাকিরা লেখাপড়া করে না। আইনের আওতায় আনা দরকার। আগেও তারা এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েছে।

ইত্তেফাক/পিও