শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আড়াইমাসেও খবর নেয়নি সরকার ও হাইকমিশন

ভারত ফেরত জেলেদের অভিযোগ

আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৭:৫২

বঙ্গোপসাগরের গভীরে মাছ শিকারে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় ভাসতে ভাসেত ভারতে অনুপ্রবেশকারী ৪৬ জেলে বেনাপোল চেকপোস্ট হয়ে বাংলাদেশে ফিরেছেন। 

বুধবার (২ নভেম্বর) রাতে জেলেরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরেছেন। এর আগে ১৮ আগস্ট ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করে তারা।

ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে ফিরে আসা জেলেদের মধ্যে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ১৬ জন, বরগুনা সদর উপজেলার ১৭ জন, পিরোজপুর জেলার ৭ জন এবং মহিপুর এলাকার ৬ জন জেলে রয়েছে।

ফিরে আসা জেলেরা জানান, জেলেদের ভারতের জলসীমায় অবস্থান নেওয়া সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে আটক করে। অনেক জেলেকে ওই দেশের জেলেরা উদ্ধার করে আশ্রয় দেন। তাদেরকে ওই দেশের বুদ্ধপুর, কাকদ্বীপ ও মৈপিঠ এলাকার আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ আগস্ট গভীর বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে পাথরঘাটা, তালতলী, মহিপুর, কলাপাড়া, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকার মাছ ধরা শতাধিক ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এসময় অনেক জেলে ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জলসীমা অতিক্রম করে ওই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়। অনেকে ওই দেশের জেলেদের কাছে আশ্রয়-প্রশ্রয় নেন। আশ্রয় নেওয়া জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়। আশ্রয় নেওয়া জেলেদের মধ্যে পটুয়াখালী জেলার ইউনুছ মিয়া নামের একজন জেলের মৃত্যু হয়। এসকল জেলেদের মধ্যে ৪৬ জন জেলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (১ নভেম্বর) ভারতের বেনাপোল চেকপোস্ট হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। রাতের জলসীমায় অবস্থান নেওয়া সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে আটক করে। বেশ কয়েকজন জেলেকে ওই দেশের জেলেরা উদ্ধার করে আশ্রয় দেন। তাদেরকে ওই দেশের বুদ্ধপুর, কাকদ্বীপ ও মৈপিঠ এলাকার আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়।

ফিরে আসা জেলে ফিরোজ জানান, ৪০ ঘন্টা সাগরে ভাসতে থাকা অবস্থায় ভারতীয় জেলেরা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেয়। 

অভিযোগ করে তিনি বলেন, দীর্ঘ আড়াইমাস সরকারের পক্ষ থেকে কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। এমনকি তার বৃদ্ধ মা-বাবাকেও সান্তনা দেয়নি কেউ। 

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঝড়ের কবলে পড়ে ভেসে যাওয়া জেলেদের ফিরিয়ে আনতে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একাধিকবার বাংলাদেশ সরকারসহ ভারতের হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কোনো সুফল মেলেনি। তা শুনে ভারতে আটকা পড়া জেলেদের ফিরে আসা নিয়েও অনিশ্চিয়তায় ছিলেন জেলেদের আত্মীয় স্বজনরা। পরে সরাসরি ভারতীয় হাই কমিশনের মাধ্যমে ভারতে থাকা জেলেদের ফিরিয়ে আনতে আমি একাধিকবার ভারতে গিয়েছি। তারা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাগাদ বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর বুধবার পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন।

 

ইত্তেফাক/পিও