শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ভরা মৌসুমে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, পর্যটকশূন্য বান্দরবান

আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৫৭

ভরা মৌসুমেও পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, পরিবহন, রেস্টুরেন্টসহ প্রান্তিক পর্যায়ে। জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সন্ত্রাস বিরোধী যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে পর্যটন খাতের সঙ্গে যুক্ত হাজারো মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।

প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানায়, এই চারটি উপজেলায় পর্যটকবাহী সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে উপজেলাগুলোতে অবস্থানরত পর্যটকেরা নিষেধাজ্ঞার পরপরই উপজেলাসমূহ ছেড়ে চলে গেছে। এদিকে পৌর শহরের বাইরের কোনো পর্যটন স্পটে ভ্রমণে যেতে না পারায় বান্দরবান জেলা শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে অবস্থানরত পর্যটকেরাও বান্দরবান ছেড়ে চলে গেছে।

বান্দরবানের পর্যটন স্পট

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, বান্দরবান জেলার রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী রাঙ্গামাটির বড়থলি, বিলাইছড়ি, সাইজাম পাড়াসহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আস্তানায় জঙ্গি প্রশিক্ষণের তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গত ১২ অক্টোবর থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী একটানা সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে। এর মধ্যে গত ১৮ অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। ১৯ অক্টোবর রাতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে সাত জঙ্গিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ২৩ অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ির পাশাপাশি নতুন করে থানচি ও আলীকদমেও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। পরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। শুক্রবার বিকালে বান্দরবান সেনা রিজিয়নের পত্রের আলোকে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

বান্দরবানের পর্যটন স্পট

জানা যায়, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকায় চার উপজেলাসহ জেলাসদরও পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। পর্যটন মৌসুমের শুরুতে ভরা মৌসুমে এমন পরিস্থিতি হওয়ায় পর্যটন খাতে ধস নামার আশঙ্কা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। অলস সময় কাটাচ্ছেন শতাধিক চাঁদের গাড়িচালক, নৌকা, ট্যুরিস্ট গাইড, পরিবহন শ্রমিকসহ হোটেল মোটেলের প্রায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

বান্দরবানের পর্যটন স্পট

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, যৌথ বাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকাগুলোতে। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তায় রুমা রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত সকল পর্যটন কেন্দ্রসমূহ খুলে দেওয়া হবে। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে।

ইত্তেফাক/ইআ