বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

'ইরানের বিক্ষোভে নিহত ৩২৬'

আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১২:১১

পুলিশ হেফাজতে ইরানের কিশোরী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৩২৬ জন নিহত হয়েছেন। নরওয়ে ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) শনিবার (১২ নভেম্বর) এ তথ্য জানায়। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঠিকমত হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে ইরানের নীতি পুলিশ। আটকের পর পুলিশ হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

এরপর তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্যাতনে মাহশার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে ইরানের নীতি পুলিশ

অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি নিজেদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানায়, দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪৩টি শিশু ও ২৫ জন নারীসহ অন্তত ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

৫ নভেম্বর সংগঠনটি যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, সেখান থেকে আজকের তালিকায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২২ জন বেড়েছে। নতুন তালিকায় জানানো হয়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশেরই ১২৩ জন রয়েছেন। এক সপ্তাহে সেখানে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৫ জন।

৩০ সেপ্টেম্বর সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদানে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে

এই বিক্ষোভের মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদানে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে। সেদিন জুমার নামাজের পর নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনে গুলি চালায়। এক পুলিশ কমান্ডারের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ চলছিল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, প্রদেশটির বন্দরনগরী চাবাহারে পুলিশ হেফাজতে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

এদিকে আইএইচআর এর পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম এই দমন পীড়ন বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে জানান, জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত ও জবাবদিহি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ দুই উদ্যোগ ভবিষ্যতে অপরাধীদের জবাবদিহি করার প্রক্রিয়াকে সহজ করবে ও ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে চলমান দমন পীড়নের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।

আইএইচআর এর পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম

অন্য এক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও একই ধরনের ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে। তারা এর সপক্ষে ১০ লাখের বেশি মানুষের স্বাক্ষরসহ আবেদন দিয়েছে।

 

 

ইত্তেফাক/ডিএস