শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে ফের কালীগঙ্গা নদীর বালু লুট   

আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৯:৫৩

উপজেলার চারিগ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দোহাই দিয়ে আবারও চলছে কালীগঙ্গা নদীর বালু বিক্রি। চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক যুবদল ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান রিপন হোসেন উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই বালু উত্তোলনের অনুমতি পেয়েছে বলে জানা গেছে। 

উপজেলার দক্ষিণ চারিগ্রামে গৃহহীনদের জন্য একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য উপজেলা প্রশাসন গত অগাষ্ট মাসে এখান থেকে বেশকিছু খাস জমি উদ্ধার করেন। সেখানেই আশ্রয়ণ প্রকল্প হবে বলে শুরু করা হয় কালীগঙ্গা নদীতে ড্রেজার দিয়ে জায়গা ভরাটের কাজ। 

দেখা গেছে, সরকারি কাজের এ সুযোগ নিয়ে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে জাহাজে বালু লোড করে নদী পথে পাচার করার দৃশ্য। আশ্রয়ণ প্রকল্পে সামান্য কিছু ফেললেও মূলত বালু বিক্রির মহোৎসব চলে। সরকারি দলের লোক বলে আশ্রয়ণের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নদীর বালু বিক্রি করলেও কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি বলে এ্যাডভোকেট রাকিবুল ইসলামসহ আরও স্থানীয়রা। 

তারা বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার ফলে ফসলি জমি, বাজার, বাড়িঘর ও  পাকারাস্তা  নতুন করে আবার ভাঙ্গনের আংশকা করেছিল নদীর পাড়ের মানুষ। গত বছর ভাঙ্গন ঠেকাতে সরকারিভাবে বরাটিয়া বাজারের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। এখানকার বালু বিক্রির ভাগ অনেকেই পেয়েছেন বলেও তারা জানান।

‘সরকারি দল করি, ব্যবসাটা করতে দিন’ আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে নদীর বালু বিক্রি, ভাঙ্গন ঠেকাতে সরকারের কোটি টাকা অপচয়’ শিরোনামে ২৮ আগষ্ট দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফের নজরে আসা মাত্র নদীর বালু কাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে প্রকাশিত ঐ সংবাদে মনক্ষুণ্ন হয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ। বেশ কিছুদিন বালু কাটা বন্ধ থাকার পর পুনরায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ কয়েকদিন ধরে শুরু হয়। কিন্তু এবারও দেখা গেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে সামান্য কিছু ফেলে জাহাজে করে অন্যত্র বালু বিক্রির দৃশ্য। 

খোরসেদ আলম, পাপুল ও ইস্রাফিল জানান, ঐ সময় আমরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সে এবার একাই ব্যবসা করছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পে না ফেলে রাতের আঁধারে জাহাজে করে মাটি অন্যত্র বিক্রি করে বলে  আমরা এবার তার সঙ্গে নেই।
 
চারিগ্রাম ইউপি মেম্বার আব্দুল হালিম বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে না ফেলে চেয়ারম্যানের বালু পাচার বন্ধের দাবিতে সব মেম্বার মিলেই ইউএনওর কাছে জোর দাবি জানাই। তিনি শনিবার গভীর রাতে তিন জাহাজ বালু জব্দ করে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ফেলার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে বালু কাটা বন্ধ করে দেন ও বালু কাটার মেশিন সরিয়ে নিতে বলেন। 

ইউএনও দিপন দেবনাথ এসময় বলেন, আগের মতো যেন না হয়। তাই এবার ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু তিনি এটা করবেন এমনটা আশা করিনি। চেয়ারম্যান এমন সময় উপস্থিত ছিলেন। পাচারের বিষয়টি সাংবাদিকদের না জানানোর জন্যও বলেন ইউএনও।   

ইত্তেফাক/পিও