বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

তামিমের ফিটনেস ক্যাম্প

আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২২, ২১:৫৭

সারাটা বছর দৌড়ঝাঁপ। এক দিনের ছুটি মেলে না। এক মহাদেশে খেলা শেষ করেই আরেক মহাদেশের বিমান ধরতে হয়। আজ অস্ট্রেলিয়া তো কাল জ্যামাইকা। এভাবেই কেটে যায় ক্রিকেটারদের জীবন। এই মহাব্যস্ততার মধ্যে মাস দুয়েকের দারুণ একটা ছুটি পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল খান। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলছেন না। ফলে লম্বা একটা সময় খেলার বাইরে কাটাতে পেরেছেন। এই সময়টা চাইলেই পরিবার নিয়ে ফুর্তি করে বেড়াতে পারতেন। নির্জন কোনো সমুদ্র সৈকতে রোদ পোহাতে পারতেন অলস শুয়ে থেকে। কিন্তু তামিম তা না করে থাইল্যান্ডের এক প্রত্যন্ত এলাকায় চলে গেলেন ফিটনেস ক্যাম্প করতে।

মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদের সৌজন্যে এই ক্যাম্প ভিডিও করে করে প্রচারও করা হলো। কিন্তু কেন এই ক্যাম্পের আয়োজন? আর ফিটনেস ক্যাম্পের আয়োজন করলেও সেটা এভাবে প্রচার করার রহস্যটা কী? তামিম ছোট্ট করে বলে দিলেন, এর পেছনে আছে একজন মানুষের একটি কথা। মানুষটি হলেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। এই মানুষটির একটি কথাতেই তামিম সিদ্ধান্ত নিলেন ফিটনেস ক্যাম্প করার এবং সেটার ভিডিও প্রচার করার।

তামিম একটু গোড়া থেকেই গল্পটা বললেন, ‘আমি চাইলে এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে পারতাম। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, এখন বাংলাদেশ দলে সবাই ফিটনেসে খুব ভালো। আর আমি যদি এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে ফিট হিসেবেই অধিনায়ক হিসেবে ওদের সামনে দাঁড়াতে পারি, তাহলে অন্তত সম্মানটা আমি পাব যে, সময়টা কাজে লাগিয়েছি।’ আর এই ভাবনাটাই তামিম শেয়ার করেছিলেন তার ঘনিষ্ঠ জন তানভীর এ মিশুকের সঙ্গে। আর সেই ভাবনা শুনে উচ্ছ্বসিত তানভীর এ মিশুক একটা প্রস্তাব দিলেন তামিমকে। তামিম মনে করেন, সে সময় নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বলা সেই কথাটাই তার ভাবনার জগতকে বদলে দিয়েছে।

তামিম ইকবাল।

তামিম বলছিলেন, ‘আমার তো নিজেকে দেখানোর কিছু ছিল না। আমি কেন প্রতিদিন ভিডিও করে সেটা প্রচার করব? এর পেছনে একটা রহস্য আছে। আমি আসলে আমার এই ফিটনেস ক্যাম্পের কথাটা নগদের সঙ্গে, মানে মূলত তানভীর ভাইয়ের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। তখন উনি একটা কথা বললেন, সেটাই আমার চিন্তা বদলে দিল। উনি আমাকে বললেন, তোমার নিজেকে প্রমাণ করার কিছু নেই; সবাই জানে, তুমি কী। কিন্তু একটা মাস ভিডিওতে তোমার এই ফিটনেসের প্রসেসটা দেখে দুটো ছেলেরও যদি লাইফস্টাইল চেঞ্জ হয়ে যায়, সেটা আমাদের জন্য বড় একটা পাওয়া হবে। এই কথাটার জন্যই আমি আসলে ভিডিও করতে রাজি হলাম।’

সেই ভিডিও আমাদের বলে দিল, কী অসাধারণ একটা পরিশ্রমের সময় কাটিয়েছেন তামিম। থাইল্যান্ডের রাজধানী থেকে অনেক দূরের ফুকেটের এক নির্জন রিসোর্টে দিনের পর দিন ঘাম ঝরিয়েছেন, দৌড়েছেন, সাইক্লিং করেছেন উঁচুনিচু পথ ধরে। নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। লক্ষ্য সতীর্থদের কাছে নিজেকে যোগ্য বলে তুলে ধরা এবং মানুষের মধ্যে তার এই কর্মপদ্ধতিটা ছড়িয়ে দেওয়া। একজন খাঁটি নেতা এভাবেই ভাবেন হয়তো। 

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন