শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিলুপ্তপ্রায় কুমিরের সন্ধান, পুনর্ভবার তীরে মানুষের ভিড়

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১৭:১৯

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার পুনর্ভবা নদীতে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির এক কুমিরের সন্ধান  মিলেছে। গত ১৫ নভেম্বর দুপুরে পুনর্ভবা নদীতে কুমির ভেসে ওঠার এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নদীর দুই তীরের গ্রাম মকরমপুর ও বেগুনবাড়িসহ আশেপাশের গ্রামজুড়ে হইচই পড়ে যায়। গ্রামের মানুষ দল বেধে কুমিরটিকে একনজর দেখার জন্য নদীর দুই তীরে ভিড় করে। 

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, পুনর্ভবা নদীতে অতীতে কোনো কুমিরের দেখা মিলেনি। এই প্রথম কুমিরের দেখা মিলেছে। এ জন্য এলাকার মানুষের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে কুমিরটিকে রামদাস সেতুর পাশে রোদ পোহাতে দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) থেকে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতির কারণে কুমিরটিকে আর দেখা যায়নি । 

স্থানীয়রা জানান, দূরদূরান্ত থেকে অনেকে কুমির দেখতে পুনর্ভবার তীরে ছুটে আসেন। রামদাস এলাকার অবস্থান ভারতীয় সীমান্তের নিকটে অবস্থিত হওয়ায় মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে কুমির ভারতের অভ্যন্তরে চলে যেতে পারে। 

পুনর্ভবা নদীতে রোদ পোহাচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় কুমির

খবর পেয়ে ওই দিনই রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির এলাকায় গিয়ে হ্যান্ডমাইকে মানুষকে সতর্ক করেন।

এ সময় তিনি উপস্থিত মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। লিফলেটে লেখা রয়েছে, কুমিরের দেখা পেলে অতি উৎসাহী হয়ে কেউ বিরক্ত করবেন না। বাচ্চাদের নদীর কিনারে যেতে দেবেন না। দিনে ও রাতে মাছ আহরণের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। ছোট নৌকা ও ভেলায় চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখুন। কুমির রোদ পোহানোর সময় ঢিল ছুড়বেন না বা কুমিরকে তাড়া করার চেষ্টা করবেন না। আপাতত নদীতে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন। রাতে নদী ও তীরের সব কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখুন। নদীর তীরবর্তী এলাকায় সাময়িক পশু চড়ানো বন্ধ রাখুন।

রাজশাহীর পাখি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী নাইমুল হাসান কুমির দেখতে পুনর্ভবায় গিয়েছিলেন। তিনি জানান, আকারে আট থেকে নয় ফুট লম্বা এসব কুমির মিঠাপানিতে অবস্থান করে। এসব কুমির সাধারণত মাংসাশী হয়ে থাকে। মাছ ও জলাশয়ে বসবাসকারী পাখি ও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণী খেয়ে বেঁচে থাকে এসব প্রজাতির কুমির। তাই এই প্রজাতির কুমিরকে বিরক্ত করা বিপজ্জনক।

তিনি আরও জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার) কুমিরের এই প্রজাতিকে ২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে। এরপরও ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকবার মিঠাপানির কুমিরের দেখা মিলেছে।

ইত্তেফাক/বুখারী/পিও