বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিক্ষোভের মধ্যে গুয়াংজু শহরের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হচ্ছে

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:২৮

বিক্ষোভের মুখে চীন সরকার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। হঠাৎ করেই বুধবার (৩০ নভেম্বর) গুয়াংজু শহরে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া সত্ত্বেও বিক্ষোভ দমন অব্যাহত রয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার বিকেলে শহরের অর্ধেক অংশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গুয়াংজু শহর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে গণপিসিআর পরীক্ষাও বন্ধ করা হচ্ছে। বিক্ষোভের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি।

বুধবার যেসব এলাকা থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে নিরাপত্তা বাহিনী সরে গেছে। তবে শহরের যেসব এলাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে সেখান থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।

শহরের যেসব এলাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে সেখান থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।

করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় যেসব দেশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে তাদের মধ্যে চীন অন্যতম। মহামারী মোকাবিলায় দেশটির সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল তার বেশিরভাগই এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। ফলে সম্প্রতি দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। 

১৮ সেপ্টেম্বর একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেদিন চীনের গুইঝো প্রদেশের বাসে করে কয়েকজনকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বাসটি দুর্ঘটনায় পড়লে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে অনলাইনে নিষেধাজ্ঞা বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।

 চীনের গুইঝো প্রদেশের বাসে করে কয়েকজনকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বাসটি দুর্ঘটনায় পড়লে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।

এরপর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে গুয়াংডং প্রদেশের শেনজেনের ফুটিয়ান জেলায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে সেখানে লকডাউনের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর জেরে লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ হয়। 

এমনকি অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনের সময়ও বিক্ষোভ হয়েছিল। সেখানে নানা দাবির পাশাপাশি ছিল করোনা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি। তারপরে অক্টোবরের শেষের দিকে ঝেংঝুতে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদন কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছিল। 

অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনের সময়ও বিক্ষোভ হয়েছিল।

এরপর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে গুয়াংজু শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে এই প্রতিবাদ ইতোমধ্যেই রাজধানী বেইজিংসহ চীনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত চায়না ডিসেন্ট মনিটরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত রোববার (২৭ নভেম্বর) ও সোমবার (২৮ নভেম্বর) চীনের ২৭টি বড় শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। 

অস্ট্রেলিয়ার এএসপিআই জানিয়েছে, ২২টি শহরে ৪৩টি বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে গুয়াংঝু শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।

২২টি শহরে ৪৩টি বিক্ষোভ হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া সত্ত্বেও চীন সরকার কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুয়াংজু শহর বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়। এই অভিযানে পুলিশের পরা পোশাকগুলো বেশ নজরকাড়া। যে কোনো রাসায়নিক হামলা থেকে রক্ষা পেতে পরা পোশাক পরে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়। একই সঙ্গে এই প্রতিবাদে আইন লঙ্ঘনকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

 

ইত্তেফাক/ডিএস