সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি

‘চুক্তির ২৫ বছরেও শান্তি নেই পাহাড়িদের মনে’

আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৪২

পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর পার হয়েছে। এত দিন পার হলেও পাহাড়িরা ভালো নেই, পাহাড়ি মানুষের মনে শান্তি নেই। ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। তাই শিগগিরই তাদের অধিকার রক্ষায় সবগুলো চুক্তি বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। 

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। সভার আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের মেইনথিন প্রমীলা। জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন, ‘চুক্তি ছিল আমার কাছে এক পবিত্র দলিল। পাহাড়ের মানুষের পক্ষে আমি চুক্তি করেছিলাম। এরপর আমি প্রতিদিন, প্রতি মাস, প্রতিটি বছর এর সফল বাস্তবায়ন দেখতে চেয়েছি। সরকারকে সহযোগিতা করতে চেয়েছি। আমরা পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের ২৫ বছর পার হয়ে এসেছি। মনে হয়, সময়টা আমার জীবনের বৃথা পার করে এলাম। যে সময়ে এ দেশের মানুষের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকল্পে আরও কিছু অবদান রাখতে পারতাম, তা হলো না।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, পত্রিকায় অনেক কথা বলা হয়েছে। ১০০টি ব্রিজ উদ্বোধন করা হয়েছে, ঢাকায় কমপ্লেক্স হয়েছে, অনেক কালভার্ট হচ্ছে। একটি মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন জেলা পরিষদ হয়েছে। কিন্তু তার পরও পাহাড়ি মানুষের মনে শান্তি নেই। ২৫ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য কোনো বিধি হয়নি। নিজেরা অস্তিত্বহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ সময়ই শুনতে পাই পাহাড়িদের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। বিশেষ করে আদিবাসী নারীরা নিরাপদ নয়। অসংখ্য ধর্ষণ এবং গণধর্ষণের খবর আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি।’

আলোচনায় নারী নেত্রী খুশী কবির বলেন, ‘আমরা দেখছি, এই চুক্তি বাস্তবায়নের পথে না গিয়ে দিনকে দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন নিজস্ব সত্ত্বা নিয়ে দাঁড়াতে না পারে, তার জন্য কিছু মানুষের স্বার্থ আছে।’ সভার আলোচক রাশেদ খান মেনন বলেন, এ চুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেসকোর শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন। এটা বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। সেদিন যখন শেখ হাসিনা চুক্তি করেছিলেন, তার আগের অবস্থান এখন নেই। এখন বিশ্বনেতাদের কাতারে তার অবস্থান। তাই চুক্তির বিষয়ে তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হস্তক্ষেপ দরকার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুল্লাহ তারেক, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।

ইত্তেফাক/এমএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন