শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যুদ্ধের জন্য অস্ত্রের ব্যবসায় ভাঁটার টান: সিপ্রি

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৩৪

২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০০টি অস্ত্রের সংস্থা উৎপাদন বাড়িয়েছে। কিন্তু উৎপাদনের গড় বৃদ্ধি আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে। সম্প্রতি স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (সিপ্রি) একথা জানিয়েছে। খবর ডয়চে ভেলের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিডের সময় থেকে অস্ত্র উৎপাদনের গড় বৃদ্ধি কমতে শুরু করেছিল বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। কারণ, অস্ত্র তৈরির কাঁচামাল সময় মতো পাওয়া যাচ্ছে না। 

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তা আরও মার খেয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। কোভিডের কারণে উৎপাদন বৃদ্ধির হার এক বছরে এক দশমিক নয় শতাংশ মার খেয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই হার আরও বেড়েছে বলে তাদের অনুমান।

কোভিডের সময় থেকে অস্ত্র উৎপাদনের গড় বৃদ্ধি কমতে শুরু করেছিল।

সিপ্রির বক্তব্য অনুযায়ী, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলিতে অস্ত্রের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় কাঁচামালের সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে চাহিদা থাকলেও অস্ত্রের উৎপাদন কম হচ্ছে। 

রিপোর্টে লেখা হয়েছে, এর ফলে ইউরোপ ও আমেরিকায় সেনাবাহিনীর সংস্কার সংক্রান্ত যে পদক্ষেপগুলো নেয়ার কথা বলা হয়েছে, তাও সমস্যার মুখে পড়তে পারে। ইউরোপ ও আমেরিকা ইউক্রেনের জন্য হাজার হাজার ডলার বরাদ্দ করছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনার জন্য। কিন্তু চাহিদা মতো অস্ত্র মিলছে না বলে দাবি করা হয়েছে।

ইউরোপ ও আমেরিকা ইউক্রেনের জন্য হাজার হাজার ডলার বরাদ্দ করছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনার জন্য।

রিপোর্টের বক্তব্য অনুযায়ী, অস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল আসে রাশিয়ার কাছ থেকে। ইউরোপ ও আমেরিকা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সেই কাঁচামাল হাতে আসছে না। 

অন্যদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার অস্ত্র ব্যবসা সামান্য বাড়লেও তারাও সমস্যার মুখোমুখি। নিষেধাজ্ঞার কারণে অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অনুঘটক বা সেমি কনডাক্টর তারা জোগাড় করতে পারছে না। কাঁচামাল ও অস্ত্র বিক্রির দাম পেতেও তাদের অসুবিধা হচ্ছে।

অন্যদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার অস্ত্র ব্যবসা সামান্য বাড়লেও তারাও সমস্যার মুখোমুখি।

কোভিডের সময় থেকেই অস্ত্রের বাজারে মন্দা শুরু হয়েছিল। কাঁচামাল সরবরাহে সমস্যার কারণেই সে সময় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, ২০২১ সালে অস্ত্রের বাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তা হতে পারেনি বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।

বিশ্বের প্রথম ১০০টি অস্ত্রের কোম্পানির মধ্যে ৪০টি আমেরিকায়। অস্ত্র ব্যবসার অর্ধেকের বেশি তারা নিয়ন্ত্রণ করে। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে বৈধ অস্ত্র ব্যবসার মোট মূল্য ৫৯২ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শুধু মার্কিন কোম্পানিগুলোর শেয়ার ২৯৯ বিলিয়ন ডলার। 

বিশ্বের প্রথম ১০০টি অস্ত্রের কোম্পানির মধ্যে ৪০টি আমেরিকায়।

২০২০ সাল থেকে আমেরিকায় অস্ত্রের ব্যবসার পতন হয়েছে শূন্য দশমিক আট শতাংশ। ইউরোপের কোম্পানিগুলোর মোট অস্ত্র ব্যবসার শেয়ার ১২৩ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছরে সেখানে অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে চার দশমিক দুই শতাংশ।

এশিয়ার অস্ত্র কোম্পানিগুলোর মোট শেয়ার ১৩৬ বিলিয়ন ডলার। ব্যবসা বেড়েছে পাঁচ দশমিক আট শতাংশ। তবে খেয়াল রাখতে হবে চীনের মোট অস্ত্র ব্যবসার পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্বের একাধিক দেশকে অস্ত্র বিক্রি করে চীন।

ইত্তেফাক/ডিএস