বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

*পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন *পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অবস্থান

নিরাপত্তার চাদরে রাজধানী

আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:২৯

রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আজ বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রয়েছে গোটা রাজধানী। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা দায়িত্ব পালন করবেন।

রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নগরীর মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে র‌্যাব-পুলিশের চেকপোস্ট। পুলিশকে সহযোগিতা করতে এপিবিএন ও আনসার বাহিনীকেও মাঠে নামানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক পুলিশ আহত হয়েছেন। তারা সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। তাই আজ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি ডিবি, সোয়াত টিম, বোম ডিসপোজাল টিমও মাঠে থাকবে। আজ রাজধানীতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, নাশকতা রোধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনে দুষ্কৃতকারীদের মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা প্রতিহত করতে র‌্যাবের সার্বক্ষণিক সাইবার নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া যে কোনো উদ্ভুট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাবের ১১২টি মোবাইল টিম, ডগ স্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও র‌্যাবের হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। র‌্যাবের হেলিকপ্টার আজ টহল দেবে রাজধানীর আকাশে।

ছবি- ইত্তেফাক

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, ৩৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। এটা  ঠিক না। ৩৩ হাজার নয়, যত লাগবে ততই প্রস্তুত রাখা হবে। আজ ঢাকার নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে। পুরো ঢাকা শহর নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে। এতে বিএনপি নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পারবে। একই সঙ্গে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব।

ছবি- ইত্তেফাক

র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন জানান, বিএনপির আজকের সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে আজ র্যাবের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, আজ সম্ভাব্য যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় যা লাগবে তাই প্রস্তুত থাকবে। আমরা পুরো ঢাকা শহর নিরাপত্তা বেস্টনিতে রেখেছি। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না।

ছবি- ইত্তেফাক

গতকাল রাজধানীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, ওয়ার্ড ও থানা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল ও স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে শোডাউন দেয়। বিভিন্ন স্থানেও যে কোনো ধরনের নাশকতা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের নির্দেশে তারা সতর্ক অবস্থান নেয়। আজো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নেবে। গতকাল রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল শেষে অবস্থান নেয় ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর একটি দল। এছাড়া গেন্ডারিয়া, কদমতলী, ডেমরা, লালবাগ, হাতিরঝিল ও রাসেল স্কয়ারে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। মিরপুর, ভূতের গলি, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর ছাড়া উত্তরা, কল্যাণপুর, যাত্রাবাড়ী ও পাইকপাড়া এলাকায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর, কলাবাগান এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শোডাউন করেন। ঢাকা মহানগরে বাইরে কেরানীগঞ্জ, ধামরাই সাভারসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাসীন ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাহারা দেয়। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, পল্টন, কল্যাণপুর, হাতিরপুল, জিগাতলা ও রাসেল স্কয়ারসহ বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন মোড়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দলবেঁধে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা ছোট ছোট মিছিল করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ও পাড়া-মহল্লায়, রাস্তা ও গলি পথে অবস্থান নেয় এবং পিকআপে চড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের।

ইত্তেফাক/এমএএম