বার্কলে কলেজ অব মিউজিকের বাংলাদেশি ছাত্রী আরমিন মুসা। জ্যাজ, ব্লুজ, লোক, শাস্ত্রীয়, আধুনিকসহ সব ধরনের গান করেন তিনি। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু গান গেয়ে দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এই তরুণ শিল্পী। তবে, এবার দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে তার কণ্ঠ পৌঁছালো বিশ্ব দরবারে। যুক্তরাষ্ট্রের সংগীত পুরস্কার অনুষ্ঠান গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের ৬৫তম আসরে মনোনয়ন পেয়েছে আরমিন মুসার গাওয়া ‘জাগো প্রিয়া’ গানটি। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত সংগীতবিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় স্থান পেলো বাংলাদেশ।
‘জাগো প্রিয়া’ গানটি লিখেছেন আরমিন মুসার মা সংগীতশিল্পী ড. নাশিদ কামাল। মা-মেয়ে জুটির এই গানটি স্থান পেয়েছে বার্কলে ইন্ডিয়ান অ্যাসেম্বল-এর ‘শুরুয়াত’ অ্যালবামে। আধা ধ্রুপদী ঢঙের এই গানের দৃশ্যায়নে বাঙালির রঙ ও সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পোশাকে প্রখ্যাত বাংলাদেশি নকশাকার বিবি রাসেলের গামছা ব্যবহার করা হয়েছে। ‘শুরুয়াত’ অ্যালবামটিতে কাজ করেছেন ওস্তাদ জাকির হোসেন, শ্রেয়া ঘোষাল, শঙ্কর মহাদেবন, বিজয় প্রকাশসহ এশিয়ান সংগীতজ্ঞদের অনেকেই। অ্যালবামটিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড আসরের ‘বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক অ্যালবাম’ ক্যাটাগরিতে। এই প্রসঙ্গে আরমিন মুসা বলেন, ‘এই গানে মায়ের ছোঁয়া ছিল। মায়ের ছোঁয়া ছিল বলেই হয়তো এমন একটা জায়গায় পৌঁছে গেছে গানটি। আমি খুবই খুশি, আনন্দিত। পুরো ব্যাপারটার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
আরমিনের জন্ম সংগীত মনস্ক পরিবারে। লোকগীতির কিংবদন্তি শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদ ছিলেন আরমীনের মায়ের নানা। আরমিনের মা ড. নাশিদ কামাল জনসংখ্যাতত্ত্বের অধ্যাপক হলেও তার বড় পরিচয় তিনি প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী। একাধারে তিনি কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার এবং সুরকারও বটে। সেই সুবাদে ছোট থেকেই গানের সাথে চাষবাস আরমিনের। স্কুলে থাকতেই বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘আরমিন ইন দ্য গ্রাসহপার’ নামের গানের ব্যান্ড। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম অ্যালবাম ‘আয় ঘুম ভাঙাই’। বর্তমানে তিনি ‘ঘাসফড়িং কয়্যার’ নামে একটি গানের দল গড়ে তুলেছেন। ভবিষ্যতে সংগীতের পাশাপাশি কবিতা নিয়েও কাজ করতে চান এই সংগীতশিল্পী।