আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ফোনে বেশ কিছু কল ও মিসড কল আসে। গ্রাহক কিছু কলের উত্তর দেয়, কিছু কল উপেক্ষা করে। হঠাৎ একটা ছোট্ট মেসেজ এলো। মেসেজ দেখে লোকটার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। কারণ, তার চলতি অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লাখ টাকা নেই। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে। এই বছরের ১০ অক্টোবর সাইবার অপরাধীরা দিল্লির একটি নিরাপত্তা সংস্থার একজন পরিচালকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লাখ টাকা তুলে নেয়।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ওই দিন তিনি বেশ কয়েকটি মিসড কল পান। কিছু কলের উত্তর দেন এবং কিছু কল উপেক্ষা করেন। তারপর সে একটি লেনদেনের বার্তা পায়।
লেনদেনের বিষয়ে প্রায় একই সঙ্গে একাধিক মেসেজ পান তিনি। এরইমধ্যে যা সর্বনাশ হওয়ার তা হয়ে গেছে। ওই ব্যক্তির কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) ছাড়া শুধু মিসড কল দিয়ে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা, এই মামলার অভিযুক্তরা ঝাড়খণ্ডের জামতারা এলাকার বাসিন্দা। এর আগেও ওই এলাকার অনেকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় সিম অদলবদল করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা। টাকা ট্রান্সফারের সময় অভিযুক্তরা ফোনে ওটিপি রেখেছিল। সেই সময় সমান্তরাল কলে অভিযুক্ত অপরাধীরা আইভিআর এর মাধ্যমে ওটিপি শুনতে পান। অভিযুক্তরা কোনোভাবে দিল্লিতে থাকা ওই ব্যক্তির সিম কার্ড অ্যাক্সেস করে।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন, অভিযুক্তরা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল ফোন নম্বরের জন্য একটি ডুপ্লিকেট সিম সংগ্রহ করেছে। এই ধরনের লেনদেনে আসামিরা জাল সিমে পাওয়া ওটিপি ব্যবহার করে।
এই ক্ষেত্রে তারা সাধারণত টেলিফোন বা মোবাইল নেটওয়ার্ক স্টাফ হওয়ার ভান করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। তারা অফারের লোভ দেখিয়ে গ্রাহক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা সতর্কতা হিসেবে কখনোই সিম কার্ড সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার না করার পরামর্শ দেন। যেকোনো মোবাইল ফোন গ্রাহককে তার মোবাইলে নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেসের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নিয়মিত ফোনে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।