শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আবারও আন্দোলনে চা শ্রমিকরা   

আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:৫৬

চা-শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরির বকেয়া বেতন প্রদান না করায় সিলেটে চা শ্রমিকদের মাঝে আবারও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মালিকপক্ষের কাছে বার বার ধর্না দিয়েও পাওনা বেতন পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। 

গত কয়েকদিন ধরে সিলেটে চা শ্রমিকরা বকেয়া টাকা পরিশোধের দাবিতে মিছিল ও সভা করেছেন। শিগগিরই তাদের দাবি পূরণ না হলে আবারও তারা কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। 

ফাইল ছবি

চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, বকেয়া পরিশোধের দাবি নিয়ে মালিকদের কাছে বার বার ধর্না দিয়েছি। শ্রম অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ১৯ মাসের বকেয়া না পেয়ে চা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। বকেয়া পরিশোধ করা না হলে আমরা আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। 

চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা আরও বলেন, তবে চা মালিক-শ্রমিক-প্রশাসন তিন পক্ষের শিগগিরই একটা বৈঠক হতে পারে। আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করছি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই বছর পরপর চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের আলোচনা হয়। এতে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কোনো কারণে এই চুক্তি নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রথা অনুযায়ী আগের চুক্তি শেষ হওয়ার পর থেকেই বর্ধিত মজুরি কার্যকর হয়। তা পরিশোধও করে মালিকপক্ষ।

ফাইল ছবি

এদিকে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। সে হিসেবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নতুন করে চুক্তি করে সে অনুযায়ী মজুরি কার্যকর হওয়ার কথা। তবে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মালিক ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দু’পক্ষ। এ পরিস্থিতিতে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে চলতি বছরের আগস্টে সিলেটসহ দেশের সবগুলো চা-বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। ১৯ দিন লাগাতার তাদের কর্মবিরতির পর গত ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা-বাগান মালিকদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চা-শ্রমিকদের মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১২০-১৭০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণার পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন চা-শ্রমিকরা। 

সিলেট জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান জানান, চা শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা শুনেছি। তবে শ্রম অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে কিনা জানি না। 

চা শ্রমিকরা বলছেন, এই ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত ১৭০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হচ্ছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী আগের চুক্তি শেষ হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ের বর্ধিত মজুরি দেওয়া হয়নি। ফলে প্রায় ১৯ মাসের বর্ধিত মজুরির বকেয়া পড়ে আছে শ্রমিকদের।

ইত্তেফাক/পিও