পণ্য খালাসের জন্য বুড়িমারী স্থলবন্দরে অপেক্ষা করছে ভারত থেকে আসা আমদানি পণ্যের শতাধিক ট্রাক। স্থলবন্দরের ইয়ার্ডে ভুট্টাবোঝাই এসব ট্রাক খালি না করে দিনের পর দিন ফেলে রাখায় পণ্য খালাসে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অন্যান্য পণ্যের ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১০-২০ দিন আগে আমদানিকারকরা ভারত থেকে প্রায় দুই শতাধিক ট্রাক ভুট্টা আমদানি করে। প্রতিটি ট্রাকে ৩০-৩৫ টন করে ভুট্টা রয়েছে। ট্রাকগুলো বন্দরের দক্ষিণ অংশের বেশ কিছু জায়গা দখল করে আছে। এসব ট্রাক আনলোড না হওয়ায় অন্যান্য পণ্যের ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে বন্দর এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বিজন কুমার তালুকদার জানান, আমদানি পণ্য বা ট্রাক কম আসলে রাজস্ব আয় কমে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থলবন্দরের মাঠে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ জট। ভুট্টার ট্রাক জটের কারণে ভারত, ভুটান থেকে পাথর ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বন্দরে প্রবেশ করতে পারছে না। ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব ট্রাকের চালকরা। ভারতের মালদহ থেকে আসা ট্রাক চালক রতন সাহা (৪৫) বলেন, ‘গত ৭ তারিখে ভুট্টা নিয়ে বুড়িমারীতে এসেছি, ২০ দিন হলো। একই ধরনের কথা বললেন, ভারতের চ্যাংরাবান্ধা থেকে ভুট্টা নিয়ে আসা চালক আজিবর রহমান (৩৫)। তিনি জানান, ১৮ দিন ধরে ট্রাক নিয়ে এখানে পড়ে আছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী দাবি করেছেন, স্থলবন্দরে প্রবেশের সড়ক ও ভিতরে পার্কিং জ্যাম হওয়ায় পণ্যবাহী ট্রাক কম প্রবেশ করছে এবং স্থলবন্দরের মাঠ জুড়ে ট্রাকের জট লেগেছে। ট্রাক আটকে থাকায় পণ্যের পিছনে ব্যয় বাড়ছে। বুড়িমারী বন্দরে আটকে থাকা প্রতিটি ভারতীয় ট্রাকের মালিককে প্রতিদিন দেড় হাজার রুপি দিতে হয়। অন্যদিকে বন্দরে ট্রাক পড়ে থাকায় আমদানিকারকদেরও প্রতিদিন ৬১০-১ হাজার টাকারও অধিক চার্জ দিতে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। চট্টগ্রামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নাহার এগ্রো পোলট্রিফিট লি. এর কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, আমরা আমদানি করা ভুট্টার ট্রাকগুলো খালি করার চেষ্টা করছি। বুড়িমারীতে ভুট্টা নিয়ে যাওয়ার ট্রাক পাওয়া যায় না। ট্রাক পড়ে থাকায় আমাদেরও অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক পরিদর্শক মাহাবুব হাসান বলেন, স্থানের সমস্যা নেই। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত পণ্য খালাস করতে। আমদানিকারকদের তাগিদ দিচ্ছি। তারা যদি ভাড়া দিয়ে বন্দরেই পণ্য রেখে দেয় সেক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না। আমরা আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে।