গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় মোবাইল নম্বর জালিয়াতি করে বৃদ্ধ মহিলার বিধবা ভাতার টাকা তুলে নিয়েছেন এক ব্যবসায়ী। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিজ ভাতার টাকা পেতে ওই বিধবা মহিলা এখন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
জানা গেছে, উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের পীড়ারবাড়ী গ্রামের মৃত চিত্ত বাড়ৈর স্ত্রী অপর্ণা বাড়ৈ ৪ বছর আগে বিধবা ভাতার জন্য তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবেক ইউপি সদস্য শান্তি রঞ্জন মল্লিকের কাছে জমা দেন। শান্তি রঞ্জন মল্লিক তখন ওই মহিলাকে ভাতা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি বিধবা অর্পণা বাড়ৈ বর্তমান ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈর কাছে ভাতার জন্য গেলে তিনি অর্পণা বাড়ৈর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এনে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে জমা দেন।
এরপর উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে অর্পণা বাড়ৈর নামে বিধবা ভাতা আসে। এবং তার মোবাইল নম্বরের নগদ একাউন্টে ৪ বছর ধরে ভাতার টাকা জমা হচ্ছে বলে ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈ বলেন, অর্পণা বাড়ৈর যে কাগজপত্র উপজেলা সমাজসেবা অফিসে সাবেক ইউপি সদস্য শান্তি রঞ্জন মল্লিক জমা দিয়ে ছিলো সেখানে যে মোবাইল নম্বরটি লেখা ছিলো সেটি এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈর। শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈ গত ৪ বছর ধরে বিধবা অপর্ণা বাড়ৈর ভাতার টাকা তুলে খাচ্ছেন। আমার ধারণা এটি সাবেক ইউপি সদস্য শান্তি রঞ্জন মল্লিক ও মাছ ব্যবসায়ী শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈর যোগসাজশেই হয়েছে।
সাবেক ইউপি সদস্য শান্তি রঞ্জন মল্লিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি অর্পণা বাড়ৈকে ভাতার জন্য একটি ফরম পূরণ করে দিতে বলে ছিলাম। সে ভুল করে হয়তো বা সেই ফরমে ওই ভুল করে শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈ নম্বরটি লিখে দিয়েছে। অর্পণা বাড়ৈ যে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন সেটি আমার জানা ছিলো না।
অর্পণা বাড়ৈ বলেন, আমি কোনো ফরম পূরণ করিনি। আমি শান্তি রঞ্জন মল্লিককে শুধু আমার ছবি ও আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়েছিলাম।
মাছ ব্যবসায়ী শচীন্দ্রনাথ বাড়ৈ বলেন, গত ৪ বছর ধরে আমার মোবাইলে টাকা আসছে। এই টাকা কীভাবে আসছে সেটি আমার জানা নেই। আমি এখন জানতে পেরেছি এই টাকা বিধবা অর্পণা বাড়ৈর ভাতার টাকা। আমি অপর্ণাকে এই টাকা ফেরত দিয়ে দিবো।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল হাসান শুভ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।