বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আমনের বাম্পার ফলন 

দাকোপে উফসী জাতের ব্রি ৮৭ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে

আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৭

বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবং প্রচণ্ড খরার কারণে খুলনার দাকোপে আমন ধান চাষে বিলম্ব হলেও বাম্পার ফলন হয়েছে। সবচেয়ে ভালো ফলন হয়েছে উফসি ব্রি ধান ৮৭ জাতের। তাই প্রতি মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদেন মাঝে এ জাতের ধান আবাদে আগ্রহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ গাজীপুরের সহযোগীতায় উপকূলীয় এলাকায় জলাবদ্ধ জমিতে উৎপাদনশীলতা ও ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা এ আবাদ করছেন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে মোট আমন ধানের চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৯১৭ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উপসি ১৬ হাজার ২৯০ হেক্টর ও স্থানীয় জাত দুই হাজার ৬২৭ হেক্টর।

প্রকল্পের মাঠ কর্মী শরিফুল ইসলাম জানান, দেশের অন্যান্য ধানের ন্যায় উফসি জাতের মধ্যে ব্রি ধান ৮৭ আবাদ বেড়েছে।  এবছর উপজেলার পানখালী, কাটাবুনিয়া, আনন্দনগর, খোনা, খাটাইল ও তিলডাঙ্গা এলাকায় ৬০০ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে । এতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগীতা করেছেন।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়ও ৪০০ বিঘা জমিসহ দুই উপজেলায় এক হাজার বিঘা জমিতে এ ধানের আবাদ হয়েছে। এছাড়াও কৃষকরা উফসি ব্রি ধান ৮৭, ৭৬, ৪৯, ৩০, বি আর ২৩, ১০, ১১ সহ অন্যান্য জাতের ধান চাষ করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৯ সালের পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম অল্প কিছু জমিতে উপজেলার পানখালী এলাকার কৃষক ভবেশ তরফদার ব্রি-৮৭ জাতের ধান চাষ শুরু করেন। তার ফলন দেখে পরবর্তীতে আশেপাশে এ ধানের আবাদ ছড়িয়ে পড়ে। 

 

খোনা এলাকার কৃষক রামেল মোল্যা জানান, এবছর তিনি তার ৯ বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৮৭ জাতের চাষ করেছেন। কয়েক দিন আগে তার ধানকাটা শেষ হয়েছে। প্রতি ৩৩ শতকের বিঘায় তিনি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছেন। এখন তিনি তরমুজ, বোরো ধান, ও আলু চাষ শুরু করেছেন।

উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের এ ধানের ফলন অনেক বেশি পাওয়ায় প্রতি মৌসুমে এ ধানের আবাদে এলাকার কৃষককের আগ্রহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি জানান।                     

এব্যাপারে ব্রি সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান গবেষক ড. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় জলাবদ্ধ জমিতে উফসী জাতের ধান চাষ করে জমির উৎপাদনশীলতা ও ফসল বৃদ্ধি করা সম্ভব। পানি কম গভীরতা জমিতে ব্রি ধান ৮৭ বেশি গভীরতা জমিতে ব্রি ধান ৭৬ চাষে সফল। এছাড়া স্থানীয় জাতের তুলনায় উফশীর ফলনও হেক্টর প্রতি এক থেকে দেড় টন বেশি পাওয়া যায় এবং ফসলও ২০ থেকে ২৫ দিন আগে ধান কাটা যায়।

তিনি জানান, এবছর মাঠে ফলন দেখে আগামী আমন মৌসুমে উক্ত জাতের ধান চাষে এলাকার কৃষকদের মাঝে আরও বিপুল আগ্রহ বাড়বে। এতে কৃষকদের জমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং জমির ফসল অনেক আগে কাটার ফলে সঠিক সময়ে রবি ফসলের চাষ বা পানির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে বোরো ধানের আবাদের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।                                                  

 

 

 

ইত্তেফাক/আরএজে