বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আলু থেকে ২৮০ কোটি টাকা আয় নীলফামারীতে

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:০০

এক সময় মঙ্গা কবলিত এলাকা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বর্তমানে আলু উৎপাদনের বিপ্লব ঘটিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে চলতি মৌসুমে ছয় হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে এক লাখ ৮৬ হাজার ৫শ টন উৎপাদন হয়েছে। আর আয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে জমিতে আলু বীজ বোপন করেন কৃষক। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে তাদের উৎপাদিত আলু ঢাকাসহ সারাদেশে নিয়ে যায়। ওই সময় দেশের অন্য কোথাও আলুর চাষাবাদ না থাকায় প্রতি কেজি আলু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে অধিক মুনাফা পায় বলে জানিয়েছেন আলুচাষি।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ছয় হাজার ৩৪০ হেক্টর (৪৯ হাজার ৮০০ বিঘা) জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আলু চাষ হয়েছে ছয় হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ বেশি হয়েছে। প্রায় ৫২ হাজার বিঘা (প্রতিবিঘা ৩০ শতাংশ) জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার পাঁচশ টন। কৃষকের উৎপাদিত সেই আলু থেকে আয় হয়েছে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা। যা উৎপাদন ব্যয়ের দ্বিগুন।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলু চাষি শামীম হোসেন বাবু বলেন, আমি এবারও ২১ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছিলাম। নভেম্বরের শুরুতে আমার আট বিঘা জমির ৯১ বস্তা আলু ৫৭ টাকা কেজি দরে ঢাকার কাওরান বাজারে চার লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। প্রথমেই আমার উৎপাদন ব্যয় উঠে গেছে। পরবর্তীতে দাম কমে যাওয়ার কারণে দ্বিতীয়বার ৩৫ টাকা কেজি এবং সর্বশেষ ২৩ টাকা দরে বাকি জমির আলু বিক্রি করার পরেও ২১ বিঘা জমির উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছি।

পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আলু চাষি ফিরোজ মিয়া জানান, আমি ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ১৫ বিঘায় আমার উৎপাদন ব্যয় দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ বস্তা। প্রতি বস্তার ওজন ৮৫ কেজি। বর্তমান বাজার মূল্যে জমিতেই ১৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়েও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, এ উপজেলায় আলু উৎপাদনের সুতিকাগার হিসেবে পরিচিতি লাভের পাশাপাশি আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর আলু চাষ করে এ উপজেলার কৃষক কোটি কোটি টাকা আয় করে থাকে। কোনো জমি যেন পতিত না থাকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য আমরা দিনরাত সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরামর্শ দিয়েছে। ফলে কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলু চাষ করেছে। এ বছর এ উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত আলু থেকে ২৮০ কোটি টাকা আয় করেছে।

 

ইত্তেফাক/আরএজে