শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাল ছাড়েননি সেই ড্রাগন চাষি: কেটে ফেলা গাছের স্থানে ‘আমেরিকান বিউটি’

আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:৪০

‘ড্রাগন চাষ নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি। ড্রাগন আবাদ যে বেশি লাভ এমন নয়। বিদেশি ফল হিসাবে এ ফলটির প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। ড্রাগনের যারা ক্রেতা তারা যদি সচেতন হন এবং প্রশাসন যদি আড়ৎগুলোতে রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফলের উপর অভিযান চালান, তবেই ড্রাগন হবে রাসায়নিক মুক্ত।’ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ড্রাগন চাষি ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স গত নভেম্বর মাসে ড্রাগনে রাসায়নিক বিষ প্রয়োগের প্রতিবাদে ৮ শতাধিক ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেন। 

কেটে ফেলা ড্রাগন গাছের স্থানে রোপণ করছেন ‘আমেরিকান বিউটি’। ছবি: ইত্তেফাক

অভিমানী ড্রাগন চাষি প্রিন্স বলেন, ‘ড্রাগনের প্রতি ভালোবাসা থেকে কেটে ফেলা গাছের জায়গায় নতুন করে ‘আমেরিকান বিউটি’ নামে নতুন জাতের ৫ শতাধিক ড্রাগন গাছে রোপন করেছেন। রাসায়নিক বিষ ছাড়া শুধু জৈব সার দিয়ে বড় করা ড্রাগন গাছ কেমন ফলন দেয় এটি এখন দেখার বিষয়। এর জন্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।’ 

কেটে ফেলা ড্রাগন গাছের স্থানে ‘আমেরিকান বিউটি’। ছবি: ইত্তেফাক

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৬ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনে ‘ড্রাগন চাষির সততা: অভিমানে কেটে ফেলেছেন ৮ শতাধিক গাছ’ খবর প্রকাশের পর দেশব্যাপী আলোচনা তৈরি হয়। অনেক ড্রাগন চাষি ফোন করে খবর নিয়েছেন। অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’ 

তাদেরকে আমি বলেছি, ‘আপনারা ড্রাগন ফলে রাসায়নিক ব্যবহার ছেড়ে দেন। আমরা যদি কেউ রাসায়নিক ব্যবহার না করি আমাদের আবাদ করা ড্রাগন যতই ছোট হোক, ক্রেতারা আমাদের ড্রাগন কিনবেন। অনেকেই সম্মতি দিয়েছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন থেকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। আমি তাদেরকে বলেছি, দেশে যতগুলো ড্রাগন বিক্রির আড়ৎ রয়েছে সব আড়তে অভিযান চালান। আড়ৎদার যদি রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ড্রাগন ফল না কেনে, তবে কেউ আর ড্রাগন ফলে রাসায়নিক প্রয়োগ করবে না। তারা কথা কথা দিয়েছেন অভিযান চালাবেন। আমার অভিমানের খবর দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনে প্রকাশের পর কথা বলার বড় একটা প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন। এ জন্য আমার প্রিয় পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাদের মতো খামারিদের কথা তুলে ধরে সমাজকে পথ দেখাবেন।’ 

কেটে ফেলা ড্রাগন গাছের স্থানে রোপণ করছেন ‘আমেরিকান বিউটি’। ছবি: ইত্তেফাক

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবু বকর প্রিন্স শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তার ‘কিষাণ সমন্বিত খামার’ ঘুরিয়ে দেখান। এবং বলেন, ‘খামারের প্রতিটি গাছ আমি সন্তানের মতো লালন-পালন করি।’ 

ইত্তেফাক/পিও