চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সারা ইসলামের নাম। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রসঙ্গ উঠলেই মানুষের মনে পড়বে তার নাম। রোগশয্যায় থেকে নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অন্যকে দান করার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন ২০ বছর বয়সী এ তরুণী। ইতোমধ্যে তার দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া চার ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের নাম চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার এই ত্যাগ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে।’
উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের নাম চিকিৎসাক্ষেত্রে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার এ ত্যাগের মাধ্যমে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি হবে। অনেক মানুষ নতুন জীবন পাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকেরা ছাড়াও সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। মাকে বলেছিলেন-‘আমার সবকিছু গবেষণার জন্য দিয়ে দিতে পারো মা’, সংবাদ সম্মেলনে এমনটিই জানিয়েছেন তার মা।
শবনম সুলতানা বলেন, ‘সারাহ সত্যি সত্যি স্বর্গীয় সন্তান ছিল। যেখানে যেত, ব্যবহার দিয়ে সবাইকে মোহিত করে রাখত। ও বলেছিল, ‘আমার সবকিছু গবেষণার জন্য দিয়ে দিতে পারো মা। সারাহর ইচ্ছা ছিল, ওর ব্রেন নিয়ে গবেষণা হোক।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউর উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১০ মাস বয়সে সারাহর দুরারোগ্য টিউবেরাস স্ক্লেরোসিস রোগ শনাক্ত হয়। এ রোগ নিয়ে তিনি ১৯ বছর ধরে লড়াই করছিলেন। সম্প্রতি বেসরকারি একটি হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। ১৩ জানুয়ারি তাকে বিএসএমএমইউর আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় চিকিৎসকেরা সারাহর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। চিকিৎসকেরা প্রথমে তাঁর দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া অপসারণ করেন।
একটি কিডনি বিএসএমএমইউতে একজন কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অন্য কিডনি বিএসএমএমইউ থেকে কিডনি ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে একজন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সারাহর দুটি কর্নিয়া আজ দুজনের চোখে লাগানো হয়। একজনের অস্ত্রোপচার হয় বিএসএমএমইউতে, অন্যজনের সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে।