শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

২৫০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল 

অনুমোদন ১০০ শয্যার জনবল ৫০ শয্যার

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:৩০

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাড়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৫০ শয্যার নতুন ভবনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে। তবে হাসপাতালে জনবলের সামর্থ্য আছে মাত্র ৫০ শয্যা পরিচালনা করার। তারপরও সার্বক্ষণিকভাবে হাসপাতালটিতে ২৫০ জন রোগী থাকে । বহির্বিভাগে দৈনিক ১ হাজার ২০০ রোগী চিকিৎসা নেন।

২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ছয় তলা ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এতে ব্যয় হয় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা। তবে উদ্বোধনের সময় চলমান ১০০ শয্যার সেবা দেওয়ার জনবল ছিল না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুরু থেকে ৫০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে লোকবল সংকট ছিল। এর মধ্যে ২০০৩ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। কিন্তু গত ২০ বছরেও ১০০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও লোকবল চাহিদা মতো পূরণ করা হয়নি। আবার ২০১৮ সালের শেষের দিকে হাসপাতালকে ২৫০ শয্যার অবকাঠামোগত উদ্বোধন করলেও ৫০ শয্যার লোকবল দিয়ে চালিয়ে আসছে। সুতরাং কাগজে কলমে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হলেও কার্যত ৫০ শয্যাবিশিষ্ট জনবল দিয়েই কোনো রকমে চালানো হচ্ছে ১০০ শয্যার কার্যক্রম।

সরেজমিনে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই রোগীরা চিকিৎসা নিতে এ হাসপাতালে আসেন। এমনিতে জনবল ও শয্যা-সংকট, তার ওপর অতিরিক্ত রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সেরা। হাসপাতালের মেঝে, বারান্দায় ও করিডরে প্রতিনিয়ত চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন শত শত রোগী।

৫০ শয্যার জনবলেও রয়েছে ঘাটতি। হাসপাতালের ২১টি অনুমোদিত ডাক্তারের পদে আছেন ১২ জন। অনুমোদিত ২১টি পদে হলো ছয় জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ছয় জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট, পাঁচ জন মেডিক্যাল অফিসার, এক জন প্যাথোলজিস্ট, এক জন ডেন্টাল সার্জন, এক জন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও এক জন তত্ত্বাবধায়ক।

এর মধ্যে ছয় জন সিনিয়র কনসালট্যান্টের মধ্যে আছে দুই জন (গাইনি ও অর্থোপেডিক্স), জুনিয়র কনসালট্যান্ট ছয় জনের মধ্যে আছে তিন জন (অ্যানেসথেসিয়া, অর্থোপেডিকস ও সার্জারি), পাঁচ জন মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে আছে তিন জন মেডিক্যাল অফিসার, এক জন প্যাথোলজিস্ট, এক জন ডেন্টাল সার্জন, এক জন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও একজন তত্ত্বাবধায়ক।

তিন জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও চার জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি), দুজন মেডিক্যাল অফিসার। মেডিক্যাল অফিসার পাঁচ জনের মধ্যে আছে তিন জন, এর মধ্যে একজন প্রেষণে জেলা কারাগারে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাত জনের মধ্যে তিন জন আছে, নার্স ৭৬ জন। ওষুধ এবং খাবার দেওয়া হয় ১০০ শয্যার।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ছয় জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও চার জন ওয়ার্ডবয়, পৌরসভার ছয় জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মডেল হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে তিন জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও তিন জন আয়ার বেতন বহন করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম  বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না; কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় জনবলের চাহিদা দুই বার দেওয়া আছে। হয়তো শিগগিরই একটা সুব্যবস্থা হবে।’

ইত্তেফাক/এমএএম