রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসানকে অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন হাসপাতালে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। একই দাবি জানিয়েছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন তারা। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে তার অপসারণের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভ শেষে হাসপাতালের স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ ও কর্মচারী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে যৌথভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি রাকিবুল হাসান তারেক, সাধারণ সম্পাদক কিশোর হাসান ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি শাহীন ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. কিশোর হাসান বলেন, ২৬৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক পর্যায়ক্রমে ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের মানুষকে সেবা দিয়ে আসছেন। অথচ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। পরিচয়পত্র নেই। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ করা হোস্টেলে থাকার জন্য বেড, বিছানা ও পানির ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে অনেকবার পরিচালককে বললেও কোনো সুরাহা করেননি। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি শাহীন ইসলাম বলেন, পরিচালক দায়িত্বে আসার পর থেকেই নানা অজুহাতে কর্মচারীদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছেন। সেই সঙ্গে লাগামহীন দুর্নীতি করছেন। আমরা তাকে অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে অপসারণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান বলেন, তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমরা অভিযোগের বিষয়গুলো দেখছি।
এদিকে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালীন সময় হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। পরে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় নিয়ম তান্ত্রিকভাবে জনবল সরবরাহের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জনবল নেওয়ার পদ্ধতি গ্রহণের কারণে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের লেলিয়ে দিয়ে চিকিৎসার পরিবেশ অশান্ত করার চক্রান্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারী অনেক নেতা চাকরি থেকে সাসপেন্ড রয়েছে। কর্মচারীদের দাবি, ৩২ বছর ধরে যেভাবে হাসপাতালে জনবল নেওয়া হয়েছিলো সেভাবেই নিতে হবে। সুনির্দিষ্টভাবে আমার বিরুদ্ধে বলার কিছু কেউ পাবে না। কেন না আমি মাত্র চার মাস হলো এখানে যোগদান করেছি। আমি হাসপাতালের দরপত্র আহ্বান করেছি। যা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলিনি বলেই হয়তো তারা অসন্তুষ্ট। এ জন্যই আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন।