বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

নতুন কূপে দিনে মিলবে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:২৫

ভোলা সদরের ইলিশা এলাকায় শাবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের আওতাধীন 'ভোলা নর্থ-২' নামের অষ্টম নতুন গ্যাসকূপ থেকে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।

বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে 'ভোলা নর্থ-২ কূপ খনন করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাজপ্রম। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে এ কূপে খননকাজ শুরু করেছে কোম্পানিটি। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে এ গ্যাসকূপে আগুন প্রজ্জলনের পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

Bhola-1

নতুন নর্থ-২ কূপ ছাড়াও এ জেলায় আরও কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র পায় বাপেক্স। এখন পর্যন্ত ৮টি কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত দ্বীপজেলা ভোলায় গ্যাসের মোট মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। সোমবার ভোলা সদরের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে এ কূপের সন্ধান পায় বাপেক্স। সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আলী বলেন, দেশীয় জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে সরকার আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে। এ হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে টবগী-১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১ তিনটি কূপ খনন কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর 'ভোলা নর্থ-২' কূপে কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে মাটির ৩ হাজার ৪২৮ মিটার গভীরতায় খননকাজ শেষ হয়।

তিনি আরও বলেন, কূপের ডিএসটি শেষ করলে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এ কূপ থেকে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। এখানে কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ রয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টায় জানা যাবে।

এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শনে গিয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী বলেছিলেন, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল তেল-গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা যাচাই করতে ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। জরিপকাজে ব্যয় হবে ২৬৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই আগামী অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে বাপেক্স।

নতুন করে তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয়। এতে জেলাগুলোর শিল্পায়ন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, ১৯৯৪-৯৫ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউয়িনে প্রথমে গ্যাস আবিষ্কৃত হওয়ার পর এর নাম দেওয়া হয় শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র। ভোলা জেলার আদি নাম শাহবাজপুর। পর্যায়ক্রমে এ গ্যাসক্ষেত্রের আওতায় বোরহানউদ্দিন উপজেলয় পাঁচটি ও ভোলা সদরে আরও ৩টি স্পটে কূপ খনন করে বাপেক্স। চলতি বছর জুলাইয়ে আরও একটি কূপ খনন করবে সংস্থাটি।

এছাড়া জেলার সর্ব দক্ষিণের চরফ্যাশন থেকে নিঝুম দ্বীপ পর্যন্ত ১২টি স্পটে গ্যাসের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ভূ-কম্পন বা সিসমিক জরিপ করবে বাপেক্স। সেখানেও বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। সর্বশেষ ভোলা সদরের ইলিশায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস প্রাপ্তিতে উচ্ছসিত ভোলাবাসী।

ইত্তেফাক/এসকে