মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গরুর আবাসিক হোটেল নিয়ে রংপুরজুড়ে আলোড়ন

আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৩২

রংপুর নগরীতে আসানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন গরুর আবাসিক হোটেল। রংপুরে ব্যতিক্রমধর্মী এই আবাসিক হোটেল নিয়ে নগরীজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নামমাত্র অল্প খরচে নিরাপদ নিরাপত্তা বলয়ে গরুর পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন আবাসিক সুবিধা।

ব্যবসায়ীরা এ আবাসিক হোটেলে এক রাত অথবা দুই রাত গরুকে বিশ্রাম দিয়ে ট্রাকে তুলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রতিটি গরুর এক রাত্রী যাপন বাবদ ৬০ টাকা করে নেওয়া হয়। সেখানে ১০০ গরু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।

গরুর আবাসিক হোটেল। ছবি: ইত্তেফাক

রংপুর-ঢাকা রুটে নগরীর প্রবেশমুখ মর্ডান মোড়ের ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় গরুর এই আবাসিক হোটেল। হোটেলে রয়েছে গরুর জন্য নির্ধারিত স্থান এবং গবাদিপশুর থাকা-খাওয়ার সুযোগ-সুবিধা।

রংপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার হাটগুলো থেকে গরু কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেওয়ার জন্য এখানে গরুকে নিয়ে রাত কাটান ব্যবসায়ীরা। এ সুযোগে গরু ব্যবসায়ীরা যেমন নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন, তেমনি পশুর সেবা নিশ্চিত হচ্ছে আবাসিক হোটেলে। এখানে রয়েছে প্রাণীর বসবাসযোগ্য সার্বিক ব্যবস্থা। সার্বক্ষণিক পরিচর্যায় রয়েছেন চারজন কর্মচারী।

জানা গেছে, রংপুর নগরীর বিখ্যাত লালবাগ হাট, বড়াইবাড়ি হাট, মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ি হাট, আমবাড়ি হাট, গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি হাট, বুড়িরহাট, তারাগঞ্জ হাট, কাউনিয়ার মধুপুর, খানসামা, তকিপলহাটসহ আশপাশের জেলার বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে আনেন ব্যবসায়ীরা। অনেকেই সেই গরু ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। গরু কেনার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে অনেক ব্যবসায়ী গরুকে ঠিকমতো খাওয়াতে ও বিশ্রাম করতে পারেন না। তাদের সুবিধার্থেই এই আবাসিক হোটেল গড়ে তুলেছেন নগরীর টার্মিনাল বড়বাড়ী দেওডোবা এলাকার বাসিন্দা আসানুর রহমান।

রাজধানীর গরুর ব্যবসায়ী মোকারম হোসেন বলেন, 'এখানে গরু রেখে নিশ্চিন্ত থাকা যায়। প্রাণীগুলো এক রাত বিশ্রাম দিয়ে ট্রাককে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে অনেক সুবিধা হয়। এ কারণে আমরা অনেকেই আবাসিক হোটেলে গরু রাখি।'

আবাসিক হোটেলে গরুর সেবা-যত্নে নিয়োজিত কর্মচারী রয়েছে ৪ জন। আলমগীর হোসেন, আলাল মিয়া, মনোয়ার হোসেন ও মিনার। তারা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা গরুর খাওয়া থেকে সকল প্রকারের দেখভাল করেন। তারা বলেন, গরুর দেখভাল করতে ভালো লাগে। হোটেল মালিকও ভালো মানুষ। যারা গরু নিয়ে আসে তাদের সন্তুষ্টি অর্জনই আবাসিক হোটেলের লক্ষ্য।

আবাসিক হোটেলের উদ্যোক্তা আসানুর রহমান বলেন, তিনি নগরীর টার্মিনাল বড়বাড়ী দেওডোবা এলাকার বাসিন্দা। সাত-আট বছর আগে মর্ডান মোড় সংলগ্ন বারো আউলিয়া এলাকায় তিনি গরুর আরাম করার জন্য হোটেলটি তৈরি করেন। ঝড়-বৃষ্টির সময় গরু নিয়ে খুব বেকায়দায় পড়তে হয় ব্যাপারী ও গরু ব্যবসায়ীদের।আবাসিক হোটেল হওয়াতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে গরুর কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। ব্যবসায়ী ও ব্যাপারীদের ভোগান্তি কমেছে। এখন হোটেলকে ঘিরে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

ইত্তেফাক/এসকে