শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

জননেত্রীর অপেক্ষায় জনশ্রেণি

আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৪

মাঘ মাসের ঠিক ১৫ তারিখ। অপেক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে ধরা দেবে প্রত্যাশিত মাহেন্দ্রক্ষণ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নারী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে আসবেন। এমন বাস্তবতার উদ্রেকে ভেসে যাওয়া। মহান এই মানুষটির জন্য অনিঃশেষ শ্রদ্ধা। কার্যত, হৃদয় থেকে সুস্বাগত বলার মধ্য দিয়ে বলতে হচ্ছে যে, প্রিয় জননেত্রী, আপনার অপেক্ষায় জনশ্রেণি।

প্রকৃতির কথা বলতেই হবে। ইতিবাচক শক্তি বিচার করতে পেরেছে। গর্ব করে বলতে পারি, ‘আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন। প্রকৃতির বিচারে অর্ধশিক্ষিত বেগম বা কথিত ম্যাডাম দণ্ডিত হয়েছেন। লজ্জা তাই এখন আর পেতে হয় না। বিদেশের মাটিতে একটা সময় মাথা নিচু করে থাকতে হতো, যখন তাদের মতো ব্যক্তিসত্তা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতেন! প্রকৃতি ফলত জবাব দিয়ে দেয়।

এদিকে সুকান্তের সেই বাংলাদেশ বদলে গিয়েছে। যে লিখে বলত, ‘হে সূর্য তুমি তো জানো, আমাদের গরম কাপড়ের কত অভাব!’ এর অর্থ এই নয় যে, দেশে নিরন্ন মানুষ নেই, কিংবা এখনো গরম কাপড় বা শীতবস্ত্র বিতরণ করছি না! করছি; কিন্তু একটা সময় এই বাংলাদেশে দরিদ্রতায় আড়ষ্ট থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই গরম কাপড়ের সন্ধান করত। সেই প্রশ্নে আজ তেমন জনগোষ্ঠী আকার সংখ্যালঘুতে যেয়ে পৌঁছেছে। এমনিতেই রংপুর ও রাজশাহীর বড় অংশের অধিবাসীদের দুস্থ বলার সুযোগ সব সময় রয়ে গেছে। এখনো তাই; কিন্তু মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে একজন শেখ হাসিনার অযুত উদ্যোগে গরম ভাতের সঙ্গে গরম কাপড় জুটছে বটে।

শীতের সূর্যের অপেক্ষায় সারা দেশই ছিল, আছে ও থাকবে----যা আমাদের ঋতু কৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক আচার বলেই অনুমিত হয়; কিন্তু অভাবে রোদ পোহানোর জন্য একটি মানুষকেও আজকের বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। এখানেই শেখ হাসিনা অনন্য। এর পরেও তিনি সব সময় ধনীশ্রেণিকে গরিবদের পাশে থাকতে তাগিদ দেন। অন্যদিকে মাঘের প্রকৃতি এখনো রাজশাহীকে মুড়িয়ে রেখেছে। কবিতা লিখে দুই লাইন বলতে ইচ্ছে করেও।

বেলা অবেলায়-----

কুয়াশা, ফেরি করে, তবু, ক্যামেলিয়া ফিরতে চায়, সোনালি রোদ্দুরে।

বাংলাদেশের জন্য সূর্যকন্যা হয়েই শেখ হাসিনা ঐশ্বরিক পর্যায়ের ব্যক্তিসত্তা হয়ে মিশে আছেন। জাতি আজ নির্ভার। পরাক্রমশালীরা অনুমতি নিতে আসে। অনুরোধ করে বলে, এটা বা ওটা কি করা যাবে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ? এখানেই বাংলাদেশ জিতে গেছে। ভূরাজনীতির নানা সমীকরণ ইস্যুতেও আস্থা ঐ একজনের কাছেই। নাম, শেখ হাসিনা। তার বিকল্প নেই। মনে করি, তার পর্যায়ের নেতৃত্ব তৈরি হতে বাংলাদেশের সময় লাগবে। ৫০ বছরের মতো তো বটেই।

সুখেই আছি। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে যেয়ে একজন কর্মী হয়ে লড়ছি। এর চেয়ে ভালো লাগার আর কী থাকতে পারে! আমাদের প্রধান কর্মী যিনি, তিনি পদ্মা ঘেঁষে যে শহরটিতে আবার আসতে যাচ্ছেন, তার বাবাকে হারিয়ে তিনি যেন উদাসী কণ্ঠে বলে উঠতে পারেন, ‘পদ্মার ঢেউ রে ও মোর শূন্য হৃদয়-পদ্ম নিয়ে যা, যা রে/ এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙা পা/ আমি হারায়েছি তারে’।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু আমাদের মধ্যেই আছেন, আছেন তার যোগ্য আত্মজা। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর থেকে আজও লড়ে যাচ্ছি। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কিংবা নাটোরে শেকড়খোঁজা একাত্তরের পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মার সংখ্যাও কমিয়ে এনেছি। প্রিয় নেত্রী, আপনি আসুন এবং আপনার উপস্থিতি রাজনৈতিক অপশক্তি মোকাবিলায় আমাদেরকে সাহস দেয়।

বড় হওয়ার জন্য এবং সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে সাহস লাগে। এমন সর্বজনীন মতবাদকে অস্বীকার করা যায় না। সাহস না থাকলে জ্ঞানের ফল হয় না। এটিও চিরন্তন মত বা দর্শন। মজার ব্যাপার হলো সেই প্রশ্নটি, যখন বলা হয়েছিল, ‘সে কি একা, যার ডান হাতে সাহস এবং বাম হাতে বিশ্বাস রয়েছে?’ শেখ হাসিনার সৎ সাহসকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখি। তাকে দেখে বাঁচতে ইচ্ছেও হয়। কারণ, নিজের সাহসের অনুপাতে জীবন সংকুচিত ও প্রসারিত হয়।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

ইত্তেফাক/এমএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন