ইরানে চলতি বছরের প্রথম মাস শেষ হবার আগেই অন্তত ৫৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটির প্রশাসন। মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করলেও আন্তর্জাতিক স্তরে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ইরানে কাজ করা নরওয়ের মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি দাবি করেছে, হিজাব বিতর্ক ঘিরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে জর্জরিত দেশটির সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও এই মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৫৫ জনই যে হিজাব বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন তা নয়। তবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গেলে পরিণতি কতোটা কঠিন হতে পারে তা প্রমাণ করতেই এই মৃত্যুদণ্ডের হার বাড়ানো হয়েছে বলে মত দিয়েছে বিভিন্ন মহল।
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার দায়ে সম্প্রতি ইরানে চার যুবকের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে একজনের বয়স মাত্র ১৮ বছর। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তার ওপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়। যার প্রমাণ সংগঠনটির কাছে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
নরওয়ের মানবাধিকার সংস্থা আইএইচআর-এর ডিরেক্টর মাহমুদ আমিরি মোঘাদ্দাম বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর করা মৃত্যুদণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। মূলত মানুষের মনে ভয়ের উদ্রেক করতেই এই আয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ফলে দেশটির প্রশাসনের সাহস আরও বাড়ছে।'
ইরানে ২০২২ সালে মোট কতোজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিলো তার মোট হিসাব এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে আইএইচআর-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের কাছে যে তথ্য আছে সে অনুযায়ী গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে কমপক্ষে ৫০০ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করা হয়েছে।