কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিনের গাড়ি বহরে পথরোধ করে হামলা ও তার একটিসহ অন্তত ৩টি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকালে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সমভুরদিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দাউদকান্দি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ প্রজন্ম লীগের সভাপতি সোহেল রানা বাদী হয়ে রোববার (২৯ জানুয়ারি) ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, দাউদকান্দি উপজেলার পেন্নাই গ্রামের ইয়াকুব (৩৪), দৌলতপুর গ্রামের চৌদলী পাড়া গ্রামের ইমরান (৩২), একই গ্রামের আল আমিন (৩১), মারুফ (৩২), আশরাফুল (২৯), এনামুল (২৫), বাউরিয়া এলাকার সুজন (৩১) ও পালের বাজার গ্রামের মহসিন (৩৪)। রোববার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জড়িতেদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান হাবিব চৌধুরী লীল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন শিকদার। তারা অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমিন শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দাউদকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমনসহ বেশ কিছু নেতা-কর্মী নিয়ে দাউদকান্দির রফারদিয়া এলাকায় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির নেওয়াজ সোহেলের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সমভুরদিয়া বাজার এলাকায় এলে এজাহারনামীয় ৮ জনসহ আরও ২০-২৫ জন তাদের গাড়ির গতিরোধ করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমিনের গাড়িতে হকিস্টিক, গ্যাস পাইপ, লাঠিসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গাড়ি ভাংচুর শুরু করে। এসময় ২-৩টি গাড়ি ভাংচুর করে। গাড়ি ভাংচুর করার সময় সোহেল রানা (মামলার বাদী) বাঁধা দিতে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। হামলাকারী সবাই দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন চৌধুরীর লোক এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা এ হামলা চালায় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, যারা হামলা করেছে তারা আমাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ইউপি নির্বাচনের সময় নেতা-কর্মীদের তিক্ততা সৃষ্টি হয়। শনিবারের ঘটনার সময় তারা রুহুল আমিন ভাইকে চিনতে পারেনি, তাই হয়তো তারা এমনটা ঘটিয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। রুহুল আমিন ভাই একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। তার ওপর হামলা করাটা তাদের উচিত হয়নি। রোববার সন্ধ্যায় মামলার বাদী সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, মাস খানেক আগে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বশির মিয়াজির সাথে মঈন উদ্দিন চৌধুরীর (নির্বাচিত চেয়ারম্যান) বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে বশির মিয়াজির ওপর হামলা করতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির গাড়ি ভাঙচুর করে। আমরা মামলা করেছি। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমিন বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইন তাদের বিচার করবে, পাশাপাশি সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে।