পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছেন এক সময় পাকিস্তান দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা দক্ষিণ আফ্রিকার মিকি আর্থার। সরাসরি কোচ হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে টিম ডিরেক্টর পদবীতেই নিয়োগ দেওয়া হবে আর্থারকে।
পাকিস্তানের সাবেক এই কোচ অবশ্য বেশিরভাগ সময়ে ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ ও দিক নির্দেশনা দেবেন দলকে। চুক্তি সম্পন্ন হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনিই প্রথম অনলাইন কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন।
দু’সপ্তাহ আগে আর্থার ও পিসিবির মধ্যে আলোচনা হয়। তখনই সাকলাইন মুশতাকের বদলি হিসেবে নতুন কোচ নিয়োগের পরিকল্পনা শুরু করে পিসিবি।
কাউন্টি ক্লাব ডার্বিশয়ারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে চুক্তি থাকার কারনে আর্থারকে নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত করতে পারেনি পিসিবি। কিন্তু গেল সপ্তাহে, পিসিবির অন্তবর্তীকালীন প্রধান নাজাম শেঠি জানান, আর্থারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, দু’পক্ষের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এপ্রিলের শুরু থেকে টিম ডিরেক্টর হিসেবে কাজ শুরু করবেন আর্থার।
প্রধান কোচের দায়িত্ব নয় পরামর্শদাতার পদবী পাচ্ছেন আর্থার। এতে করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভিন্ন ধরনের একটি ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরি হবে। প্রতিটি সফরে পাকিস্তান দলের সঙ্গে থাকবেন না আর্থার। কিন্তু তার নিয়োগ করা সাপোর্ট স্টাফদের একটি গ্রুপ দল পরিচালনা করবেন এবং হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের এক সময়ের প্রধান গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্ন, হাই-পাওয়ারফুল সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া তিনজন বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং কোচও দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু প্রধান কোচ হিসেবে কেউ থাকছেন না।
ইংলিশ কাউন্টি মৌসুম চলাকালীন দলের সঙ্গে থাকবেন না আর্থার। যেমন, জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফর এবং সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ তাকে পাবে না পাকিস্তান। কাউন্টি মৌসুম শেষে এ বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং শীতের পর অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সফরে আর্থার দলের সাথে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পাকিস্তান দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন আর্থার। তার অধীনে সাদা বলের ক্রিকেটে সাফল্য পেয়েছে পাকিস্তান। তার অধীনেই ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় করে পাকিস্তান। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খারাপ পারফরম্যান্সের পর সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বে একটি টি-টোয়েন্টি দল গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখেন আর্থার। আইসিসি র্যাংকিংয়ে পাকিস্তানকে শীর্ষে নিয়ে যান তিনি। এছাড়া টেস্টেও সাফল্য ছিলো চোখে পড়ার মত। যদিও লাল বলের দলটি তৈরি করা কঠিনই ছিলো। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আর্থারকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার জায়গায় কোচের দায়িত্ব পান মিসবাহ-উল-হক।
পুনরায় আর্থারের উপস্থিতি দলের জন্য সুফল বয়ে আনবে বলেই মনে করছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। কোচিংয়ের প্রথম মেয়াদে শুধুমাত্র বাবর আজমই নয় দলের অনেক ক্রিকেটারদের উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন আর্থার। টেস্টে বাবরের খারাপ সময়ে তার পাশে থাকা ও ওয়ানডে ফরম্যাটে উন্নতিতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। এছাড়াও সরফরাজ, হাসান আলি, শাহীন শাহ আফ্রিদি, ফখর জামান এবং শাদাব খানের মতো ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলেছেন আর্থার। পাকিস্তানের দায়িত্ব হারানোর পর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে ডার্বিশায়ারে যোগ দেন আর্থার।