তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ৭.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে হতাহতদের বের করে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ১৯৩৯ সালের পর সবচেয়ে বড় এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার ভবন ধসে পড়ে।
দেশটির এই কঠিন পরিস্থিতি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান কতখানি সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারেন তার দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব। কেননা আগামী মে মাসে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে এমন ধরনের দুর্যোগ এরদোয়ানের জন্য একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইস্যুটি আসন্ন নির্বাচনেও ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
ভূমিকম্পে সরকার কতখানি জরুরি ভূমিকা পালন করতে পারে তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। কেননা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারলে অনেক প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব। তাই এখানকার সফলতা বা ব্যর্থতা এরদোয়ানের সামনের নির্বাচনে যে প্রভাব ফেলবে—সেটাই স্বাভাবিক। ইস্তাম্বুল থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক রেসুল সেরদার জানিয়েছেন, তুরস্কের জন্য সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। একদিকে যেমন দেখা দিয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় যে কোনো ধরনের ব্যর্থতার প্রভাব পড়তে পারে এরদোয়ান ও তার সরকারের ওপর। কারণ এরই মধ্যে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে। তাই এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অসংখ্য মানুষ আটকা পড়ে আছে। প্রতি ক্ষণে ক্ষণে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তুরস্কের গাজিয়ানটেপ ও কাহরামানমারাস প্রদেশেই কার্যত এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে এয়ারক্রাফট। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বানও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।