কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার জিঞ্জিরাম নদীতে ১৪ কোটি ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যাম প্রকল্পটি দীর্ঘ ১৪ বছরেও কৃষকের কোনো কাজে আসছে না। এ নিয়ে কয়েক দফা তদন্ত করলেও প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, ২০১০ সালে শুরু হওয়া রাবার ড্যাম প্রকল্পটি ২০১৫ সালে শেষ হলেও নদের দুই তীর মজবুত করে নির্মাণ করা হয়নি। এছাড়া কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা রাখা হয়নি। রাবার ড্যাম কর্তৃপক্ষের এমন অবহেলায় স্থানীয় কৃষকরা হতাশা প্রকাশ করেছে। দীর্ঘ ১৪ বছরেও ড্যামটি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি সেচ কাজে। সেচ কাজে ব্যবহার উপযোগী না করায় ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের ১৪ কোটি টাকার এ প্রকল্প।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার লালকুড়া খেয়াঘাট হতে খেওয়ার চর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার ভঙ্গুর অবস্থা। প্রকল্পের সুরক্ষা ও নদী শাসনের জন্য ২ কিলোমিটার সিসি ব্লক ও রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও তা হয়নি। নদের পূর্ব দিকের কোনো কাজ না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে দু’পার ভেঙে কৃষি জমি ও বাড়িঘর ঝুঁকিতে থাকে।
রাবার ড্যামের পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন রিপন বলেন, দীর্ঘদিনেও প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় এলাকার প্রায় ১২শ’ কৃষক ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন, নলকূপ বসিয়ে সেচকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণসহ প্রকল্পটি চালুর দাবি জানান।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন রিপন, নদে ড্রেজার দিয়ে মাটি তোলায় সিসি ব্লকের ক্ষতি হয়েছে। নতুন বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলে কাজ করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, রাবার ড্যাম প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সেচ সুবিধার আওতায় আসবে ওই এলাকার ২ হাজার ৫০০ কৃষক এবং ২ হাজার হেক্টর আবাদি জমি। প্রকল্পটি চালু হলে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনের সংখ্যাও কমে যাবে।
উপজেলা প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী যুবায়েদ হোসেন বলেন, রাবার ড্যাম এলাকার নদীর দু’পাশে যে পরিমাণ বাঁধ নির্মাণ করা দরকার তা না করায় প্রকল্পটি চালু করা যাচ্ছে না। বাঁধ নির্মাণ না হলে সেচ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কমপক্ষে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ করলে এ প্রকল্পের সুফল পাবে এলাকার কৃষকেরা।