বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

৭১ বছর পর প্রথম ভাষা দিবস পালন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের  

আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:০৬

খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৭১ বছর পর বাঁশের তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে সোনাইআগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীরা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৪৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম স্কুল আঙ্গিনায় একুশে ফেব্রয়ারি মহান ভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। স্কুলের আঙ্গিনায় শিশু শিক্ষার্থীরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে বাঁশ দিয়ে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে। গ্রামের বিভিন্ন জনের বাগান এবং বন থেকে নানান ফুল সংগ্রহ করে তারা। এরপর মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোর বেলায় তারা নিজেদের তৈরি করা শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানায়। কমলমতি ছাত্রছাত্রীদের  এমন আবেগ ও অনুভূতি দেখে স্কুলের শিক্ষকরাও তাদের সহযোগিতা করেন।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রিপন চৌধুরি বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেগ দেখে আমি নিজেও শহীদ মিনার তৈরির কাজে তাদের সহযোগিতা করি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ম্রাগ্য মারমা বলেন, ১৯৪৯ সালে এ স্কুলটি স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু ভাষা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘ ৭১ বছরেও স্কুলে কোনো শহীদ মিনার র্নিমিত হয়নি। এবার প্রথম কমলমতি শিক্ষার্থীরা ভাষা দিবস পালনের জন্য স্কুলে শহীদ মিনার বানানোর উদ্যোগ নেয়। তারা গ্রাম থেকে বাঁশ ও অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করে নিজেরাই স্কুল আঙ্গিনায় একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে।

তিনি বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠার পর এবারই সর্বপ্রথম ভাষা দিবস পালন করা হয়। এ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে স্কুলের শিক্ষকরাও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধান শিক্ষক ম্রাগ্য মারমা বলেন, স্কুলের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৯ ভাগই মারমা ও ত্রিপুরা ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর। তিনি ছাত্রছাত্রীদের ভাষা শহীদদের প্রতি আবেগ-অনুভূতির কথা বিবেচনায় এনে স্কুলে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। 

রামগড় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, এ উপজেলার বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগেরর নির্ধারিত নকশায় স্থানীয়ভাবে অনুদান নিয়ে স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যাবে। কিন্তু পার্বত্য এলাকায় স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহ দুরহ।

তিনি বলেন, সোনাইআগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এবার নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীদের এ অনুভূতির মূল্যায়ন করে অবিলম্বে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের কাছে জোর দাবি জানাই।

ইত্তেফাক/আরএজে

ইত্তেফাক/আরএজে