শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনার ভয়ে সন্তানসহ ৩ বছর ঘরবন্দি নারী

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫০

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করলেও এই রোগের আতঙ্ক এখনও অনেকের মধ্যে কাজ করে। এখনও কেউ কেউ নিজেদের সুরক্ষায় মাস্ক ব্যবহার করার পাশাপাশি ঘর থেকে কম বের হচ্ছেন। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ অদ্ভুত ঘটনার মুখোমুখি হলেন ভারতের পুলিশ সদস্যরা। করোনা সংক্রমণে মারা যেতে পারে এমন আশঙ্কায় তিন বছর ধরে ঘরবন্দি থাকা এক নারীকে তার সন্তানসহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খবর ইকোনমিক টাইমসের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি পুলিশের নজরে আনেন ওই নারীর স্বামী প্রকৌশলী সুজন মাঝি। তিনি অভিযোগ করেন, ওই সময় তাকেও বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। সম্প্রতি এই ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির গুরুগ্রামের চক্করপুরে। 

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করলেও এই রোগের আতঙ্ক এখনও অনেকের মধ্যে কাজ করে।

এছাড়াও বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মুনমুন মাঝি নামের ওই নারী তার ৭ বছরের শিশুকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। ঘটনার তিন বছর পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তার স্বামী বিষয়টি চক্করপুর থানায় জানান।

সুজনের অনুরোধে স্বাস্থ্যকর্মী ও শিশু কল্যাণ অধিদপ্তরের সদস্যদের নিয়ে পুলিশের একটি দল ওই বাড়িতে গিয়ে বাড়ির মূল দরজা ভেঙে তার স্ত্রী মুনমুন ও তাদের ১০ বছরের শিশুকে উদ্ধার করে। এ সময় ঘরের ভেতরে ময়লা, আবর্জনা, চুল, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়।

 ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মুনমুন মাঝি নামের ওই নারী তার ৭ বছরের শিশুকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।

পুলিশ জানায়, এ সময় ওই নারী তার সন্তানের চুল ও নিজের চুল কেটে ফেলেন বাড়িতে। গ্যাসের চুলার পরিবর্তে ইন্ডাক্সনের মাধ্যমে রান্না করা হতো। তার ছেলেমেয়েরা ঘরের দেয়ালে পেন্সিল দিয়ে ড্রয়িং করে লেখাপড়া করত। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে শিশুটি সূর্যের আলোও দেখেনি। প্রতিবেশীরাও জানতে পারেনি যে তারা গৃহবন্দী।

এ বিষয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, করোনা মহামারির ভয়ে ওই নারী এমনটি করেছেন, তার ধারণা ছিল, ঘর থেকে বের হলে তার সন্তান করোনায় মারা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এসময় ওই নারী তার স্বামী সুজনকেও ঘরে থাকতে দেননি। 

খবরে জানানো হয়, নারী ও শিশুটিকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

২০২০ সালে একবার ভারতে করোনা লকডাউন শিথিল হয়ে গেলে, তাকে অফিসের জন্য বাড়ি ছেড়ে বাইরে থাকতে হয়েছিল। তিনি শুধুমাত্র ভিডিও কলের মাধ্যমে তার স্ত্রী ও সন্তানদের দেখতে পান। 

বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, সন্তানের স্কুলের ফি দিতেন স্বামী সুজন। এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে বাড়ির দরজায় রেখে দিতেন। খবরে জানানো হয়, নারী ও শিশুটিকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ইত্তেফাক/ডিএস