শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

দিল্লিতে ব্লিংকেন-লাভরভ বৈঠক, যুদ্ধ বন্ধের আনুরোধ

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩, ১৩:২২

দিল্লিতে জি-২০ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে মুখোমুখি আলোচনা করলেন ব্লিংকেন ও লাভরভ। গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে কখনো আলোচনায় বসেননি রাশিয়া ও আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রীরা। 

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ বৈঠকে তারা দুইজনেই ছিলেন। কিন্তু লাভরভ কক্ষত্যাগ করায় আলোচনার সুযোগ ছিল না। সেটা সম্ভব হলো দিল্লিতে। একটু হলেও বরফ গললো। আমেরিকার অনুরোধে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বৈঠকে রাজি হলেন।

দিল্লিতে জি-২০ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে মুখোমুখি আলোচনা করলেন ব্লিংকেন ও লাভরভ।

বৈঠক চলেছে দশ মিনিটের মতো। রাশিয়ার সংবাদসংস্থা তাস জানিয়েছে, আমেরিকার অনুরোধে এই বৈঠক হয়েছে। ব্লিংকেন পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়াকে অবিলম্বে আগ্রাসন বন্ধ করার অনুরোধ করেছেন।

ব্লিংকেন উল্লেখ করেছেন, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে সমর্থন করে যাবেন। রাশিয়া যাতে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি 'নিউ স্টার্ট' নিয়ে আলোচনায় বসে সেই অনুরোধও তিনি করেছেন। তিনি রাশিয়ার জেলে বন্দি মার্কিন নাগরিক পল হোয়েল্যানকে মুক্তি দেয়ার অনুরোধও করেছেন।

রাশিয়া যাতে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি 'নিউ স্টার্ট' নিয়ে আলোচনায় বসে সেই অনুরোধও তিনি করেছেন।

ব্লিংকেন ও লাভরভের এই বৈঠক পূর্বনির্ধারিত ছিল না। এটা জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের অংশও ছিল না। আমেরিকার অনুরোধ রাশিয়া মেনে নেয়ায় এই সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানাচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পার হওয়ার পর দিল্লিতেই প্রথমবার আমেরিকা ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যে বৈঠক করলেন এটা খুবই বড় কূটনৈতিক সাফল্য। 

দিল্লিতে এই বৈঠক সম্ভব হয়েছে তার কারণ, ভারতের সঙ্গে রাশিয়া ও আমেরিকা দুই দেশেরই সম্পর্ক খুব ভালো। ভারতে এই আলোচনা হওয়ার মতো একটা পরিবেশ ও পরিস্থিতি ছিল।ব্লিংকেন জানিয়েছেন, তিনি লাভরভকে বলেছেন, 'পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। বিশ্বে কী হচ্ছে তা দেখার দরকার নেই, আমেরিকা সব সময়ই রাশিয়ার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চায়। ঠাণ্ডা যুদ্ধ যখন চরমে, তখনো আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন এই বিষয়ে আলোচনা করেছে, চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।'

ব্লিংকেন ও লাভরভের এই বৈঠক পূর্বনির্ধারিত ছিল না।

জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকেও ব্লিংকেন বলেছেন, 'আমরা রাশিয়াকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থার জন্য এটা দরকার।'

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের পর কোনো যৌথ প্রস্তাব নেয়া হয়নি বা ঘোষণাপত্র জারি করা হয়নি। ব্লিংকেন জানিয়েছেন, রাশিয়া ও চীন বিরোধিতা করায় প্রস্তাব নেয়া বা ঘোষণাপত্র জারি করা সম্ভব হয়নি। 

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের পর কোনো যৌথ প্রস্তাব নেয়া হয়নি বা ঘোষণাপত্র জারি করা হয়নি।

ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন দেশের ভিন্ন মত ছিল। কোনোভাবেই এনিয়ে মতৈক্য সম্ভব হয়নি। যদি সকলে একমত হতো, তাহলে যৌথ বিবৃতি দেয়া যেত।

ইত্তেফাক/ডিএস