শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সিন্ডিকেটের থাবায় অর্ধ কোটি টাকার হাট ২৫ লাখে ইজারা

আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৮:২৯

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সিন্ডিকেটের কারণে অর্ধ কোটি টাকার হাট ২৫ লাখে ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে দর হাঁকানোর কারণে প্রকৃত ইজারাদাররাও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তাদের কাছে। ৪-৫ বছর আগেও যেসব হাট ইজারাদার দেওয়া হতো ৫০-৬০ লাখ টাকায় এবছর তা বিক্রি হয়েছে ২৫ লাখে।  

জানা গেছে, বাংলা ১৪৩০ সনের জন্য উপজেলার ২৪ হাটবাজারের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি ছিলো দরপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। দরপত্রে কিশোরগঞ্জ হাটের ইজারা ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছে ২৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭২ টাকা এবং গাড়াগ্রাম হাটের ইজারা মূল্য ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ২৭৬ টাকা। এতে কিশোরগঞ্জ সদর হাটের জন্য দরপত্র ক্রয় করেন ৪ জন ও গাড়াগ্রাম হাটের জন্য দরপত্র ক্রয় করেন ৪ জন। তখন সিন্ডিকেট করে ইজারাদাররা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে মূল্য হাঁকান। কিশোরগঞ্জ হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ছিলেন শফিকুল ইসলাম শফি ২৫ লাখ ১২ হাজার টাকা যা ভিত্তি মূল্যের চেয়ে ৩ হাজার ২৮ টাকা বেশি এবং সর্বনি¤œ দরদাতা ছিল এরশাদ হোসেন ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। এদিকে গাড়াগ্রাম হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ছিল ইদ্রিস আলী ১৭ লাখ ৭১ হাজার যা সরকারী মূল্যের চেয়ে ১২৭২৪ টাকা বেশি এবং সর্বনিম্ন দরদাতা ছিলেন ওই শফিকুল ইসলাম শফি ১৭ লাখ ৬০ হাজার। 

অভিযোগ উঠেছে শফিকুল ইসলাম কৌশলে কিশোরগঞ্জ হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা হন এবং গাড়াগ্রাম হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ইদ্রিস আলী কাগজে-কলমে হাটের ইজারা পেলেও শফিকুল ইসলাম সমঝোতা করে দুটি হাটের ইজারা বাগিয়ে নেন। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাবুল বলেন, প্রকৃত পেশাদার ইজারাদাররা হাটের দরপত্র ক্রয় করছে না। তারা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট করে প্রকৃত ইজারাদারদের কাছ থেকে হাটের ইজারা হাটের ইজারা এক প্রকার ছিনিয়ে নেয়। 

কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, ৪-৫ বছর আগে কিশোরগঞ্জ ও গাড়াগ্রাম হাট দুটির ইজারা ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মত হাঁকা হতো। কিন্তু বর্তমানে সিন্ডিকেটের কবলে পরে হাটের ইজারা প্রতিবছর কমছে। গত বছর কিশোরগঞ্জ হাটের ইজারা ছিলো ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ও গাড়াগ্রাম হাটের ইজারা ছিল ২১ লাখ টাকা। 

কিশোরগঞ্জের হাটের ইজারা প্রাপ্ত শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, সরকারি মূল্যের থেকে বেশি দিয়ে ইজারা পেয়েছি। দরপত্র ক্রয়কারীদের সঙ্গে রফাদফা করে হাট নিয়েছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- সাংবাদিকদের কোনো গোনায় ধরি না। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ইজারা দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি বাইরে আলোচনা করে আসে সেখানে আমাদের করার কিছু নেই।

ইত্তেফাক/এবি/পিও