শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাজশাহীতে ইউএনও’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৩, ২২:৩৭

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জানে আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৬ মার্চ) রাজশাহী জেলা স্পেশাল ট্রাইবুনাল ও সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস মামলাটি করেন। 

মামলাটি আদালতে উত্থপিত হলে বিচারক আব্দুর রহিম শুনানি শেষে রাজশাহী জেলা সমন্বিত দুদককে তদন্তের দির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান দাখিলকারী আইনজীবী রায়হান কবির। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি ওই আইনজীবী গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে রাজশাহী পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বলা হয়, ‘গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে মো. জানে আলম ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর যোগদান করেন। এর পর থেকে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রায় ৫ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। উপার্জনকৃত অর্থ থেকে সে তার এলাকায় বিলাস বহুল বাড়ি, জায়গা জমি ও গবাদি পশু পালনের খামার তৈরি করেছেন। এছাড়া নামে বে-নামে অনেক জায়গা জমি ক্রয় করেছেন। মামলার সঙ্গে এসবের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের সিংহভাগ টাকা, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণে বিভিন্ন ইটভাটা থেকে ইট ও বালুমহাল থেকে বিনামূল্যে জোরপূর্বক বালু নেওয়া এবং ঘর-বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে অতি নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের সব ঘর নির্মাণ সম্পন্ন না হলেও তিনি সরকারিভাবে প্রকল্পের অগ্রগতি শতভাগ দেখিয়েছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বিল-ভাউচার স্বাক্ষর করার জন্য ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে অর্থ আদায় করেন। টিআর-কাবিখাতে উন্নয়নমূলক কাজে ১০% কমিশন গ্রহণ করেন। এডিপির টাকায় ভাগ-বাটোয়ারায় অংশ নিয়ে কমিশন গ্রহণ করেন। এছাড়া আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হলেও আদিবাসীদের ঘর দেওয়া হচ্ছে না। বরং ইউএনও টাকার বিনিময়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দিয়েছেন। যার ফলে অনেক আদিবাসী টাকা না দিতে পারায় তারা ঘর পাননি।’

মামলায় আরও বলা হয়, ‘গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দুর্নীতির এক পর্যায়ে ঘুষ না পেয়ে বিএমডিএর কাজে বাধা প্রদান করেন। উপজেলার গোদাগাড়ী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭৮ নম্বর রঘুনাথপুর মৌজার ৫৮ নম্বর দাগের ১.৮৬ একর খাস পুকুরটি ১১ লাখ ৭ হাজার ৫৪২ টাকা ব্যয়ে পুনঃখননের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স আলী হোসেন এন্টারপ্রাইজকে অর্ডার প্রদান করে। এর পর ঠিকাদার আরিফ হোসেন ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর পুকুরটি পুনঃখননের কাজ শুরু করে। সেই কাজে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানে আলম পুকুর পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়নের জন্য ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু আসামি ঘুষের টাকা না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে গত ৫ জানুয়ারি গোদাগাড়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ হাসানকে দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে খনন কাজে ব্যবহৃত এক্সকেভেটর গাড়ীর দুটি ব্যাটারি নষ্ট হয়। গাড়িটির ইঞ্জিনের অধিকাংশ যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে তাকে বালু ঢুকিয়ে অকেজো করে দেওয়া হয়। শেষে গাড়ির হেলপার আল মারুফকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে ১৫ দিনের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।’ 

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমি জানি না। অফিসের কাজে বাইরে আছি।’

ইত্তেফাক/পিও