শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পুলিশকে কড়া হুমকি পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীর

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৪

পশ্চিমবঙ্গে এখন প্রতিদিনই নতুন নজির তৈরি হচ্ছে। শেষ নজির গড়লেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। পুলিশকে হুমকি দিয়ে। সাধারণত বিরোধী নেতা কর্মীরা এবং আন্দোলনরত মানুষ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আর অভিযোগ করেন সাধারণ মানুষ যাদের চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অপরাধ নিয়ে ক্ষোভ থাকে। 

কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রী পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, যাবতীয় ক্ষোভ উজাড় করে দিচ্ছেন, সেটা সচরাচর দেখা যায় না। তার ওপরে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।

কিন্তু গণশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সে সব ধর্তব্যের মধ্যে না এনে বলেছেন, 'যারা মন্ত্রীকে গালমন্দ করছেন, অপদস্থ করছেন, তারা অপরাধী। আমি বলে রাখছি, পুলিশকে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।' 

মন্ত্রী বলেছেন, 'পুলিশকে বুঝতে হবে কারা অফিশিয়াল দল। আঁশ আর বাঁশ পাতাকে এক করলে হবে না। মাছের আঁশ তো ফেলে দেয়া হয়। আর বাঁশ পাতার দায়িত্ব আছে। পুলিশ কি ভাবছে উনিও দল, ইনিও দল? পুলিশ কী নাবালক নাকি! পুলিশকে সাবালক হতে হবে। আমি কোনো ভণ্ডামি  শুনব না।'

সিদ্দিকুল্লা এই কথাগুলো বলেছেন বর্ধমানের ঝিকরার সভায়। তিনি এটাও জানিয়েছেন, সাবেক ব্লক সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ। পুলিশ ইসমাইলের কথাতে চলছে।  সিদ্দিকুল্লা জানিয়েছেন, যাদের পয়সা আছে তারা পুলিশকে তেল দেবে। তিনি জনপ্রতিনিধি। তিনি পুলিশকে তেল দেবেন না। দরকার হলে মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজিকে বলবেন। 

ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী

মহম্মদ ইসমাইল জানিয়েছেন, সিদ্দিকুল্লা মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাই এরকম কথা বলছেন। উদয়ন গুহর মন্তব্য, সিদ্দিকুল্লার মতো আরেক মন্ত্রী উদয়ন গুহও চরম বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের একাংশ দুর্নীতিতে জড়িত আছে।

দিনহাটায় তিনি বলেছেন, 'সততার প্রতীক নিয়ে আজ নানান কথা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিচে লিখতে পারেন সততার প্রতীক। তার ১০০ শতাংশ অধিকার আছে। কিন্তু, আমাদের মত কিছু উদয়ন গুহ থাকার জন্য ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ছবির নিচে সততার প্রতীক লিখতে পারছেন না। তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী নয়। আমরা উদয়ন গুহরা দায়ী। আমরা কাউকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছি। ঘর দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছি।'

উদয়ন আরও বলেছেন, 'যারা এই দুর্নীতি করেছে, তাদের পঞ্চায়েতে টিকিট দেয়া হবে না। যদি আমার পদ যায় তো যাক। কিন্তু আমি সিদ্ধান্তে অবিচল থাকব।'

ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী তো দল ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর হৃদয়ে আমার কোনো স্থান নেই। তাহলে আমি দলে থেকে কী করব? তবে কোন দলে যাবেন, তা তিনি জানাননি।'

দিন কয়েক আগেই আব্দুল করিম জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তার শত্রুকে তিনি ব্লক সভাপতি করেছেন। তিনি এই সিদ্ধান্ত মানবেন না। দরকার হলে তিনি দল ছাড়বেন। তার দাবি, কানাই আগরওয়ালকে যেদিন থেকে জেলার সভাপতি করা হয়েছে তখন থেকেই সন্ত্রাস বেড়ে গেছে।

ইত্তেফাক/ডিএস