কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ছাত্রলীগের তিন নেতার ওপর বহিরাগত হামলাকারীদের গ্রেফতার, অছাত্র ও বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, আহত শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ এবং মো. সালমান চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানপূর্বক নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত ও হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণের দাবিতে পূর্ব-ঘোষণা অনুযায়ী আধা বেলা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। পাঁচ দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা শেখ মুজিব আমার পিতা ইত্যাদি বিভিন্ন বই পড়া, কবিতা আবৃত্তি এবং গানের মাধ্যমে কর্মসূচি চালিয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে নিজের লেখা 'রূপসা পাড়ের বেলা' কবিতা আবৃত্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইদুল আল আমিন।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ইতোপূর্বে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেছি। কিন্তু এখনও আমাদের কোন দাবি পূরণ করা হয়নি৷ আমরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন থেকে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। যার অংশ হিসেবে আজকের আধা বেলা অবস্থান কর্মসূচি, আগামীকাল সংহতি সমাবেশ এবং বৃহস্পতিবার সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ পালন করব। এর পরেও যদি দাবি আদায় না হয় তাহলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করব।
আন্দোলনের মুখপাত্র রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে কিন্তু আমরা কোন কার্যকর পদক্ষেপ কিংবা আশ্বাস পাইনি। যতদিন দাবি আদায় না হবে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা আশা করছি উপাচার্য মহোদয় আমাদের যৌক্তিক দাবিসমূহ অতি শীগ্রই মেনে নিবেন।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান জেরিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষাঙ্গন। এভাবে বহিরাগত কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমাদের আজকের আজকের কর্মসূচি হল পাঠ চক্রের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে বার্তা দেয়া যে আমরা বই নিয়ে রাস্তায় নেমেছি, আমাদের নিরাপত্তা নেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দুপুরে খালেদ সাইফুল্লাহ (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা) হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা ও বহিরাগতদের দিয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষ । এতে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান চৌধুরী হৃদয় ও বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহান গুরুতর আহত হন।
