বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বোরহানউদ্দিনে মুজিববর্ষের উপহার পাচ্ছেন আরও ১০৬ গৃহহীন

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩, ২১:১২

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ভোলার বোরহানউদ্দিনের ২৯২টি গৃহহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে। সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১ম, ২য়, ৩য় পর্যায়ে ১৮৬টি পরিবারকে ঘরের দলিল ও সনদপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতির জনকের ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে ৪র্থ পর্যায়ে আরও ১০৬ টির মধ্যে ৫৫ ঘর আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল হোসেন জানান, উক্ত প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ২৮টি, ২য়, ৩য় পর্যায়ে যথাক্রমে ১৬টি ও ১৪২টিসহ মোট ১৮৬টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ে ১০৬ টি ঘরের মধ্যে ৫৫টির কাজ শেষ হয়েছে। যা ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনের পর বিতরণ করবে প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, খাসজমিতে ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে একক গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে থাকবে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা। এছাড়া প্রতিটি ১০ পরিবারের সুপেয় পানির জন্য একটি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি আরও জানান, বৃহৎ এ কর্মযজ্ঞে ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা,তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ও প্রবীণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা। পক্ষিয়া ইউনিয়নের তৃতীয় লিঙ্গের কলি বলেন, সমাজের লোকজন আমাদেরকে ভিন্ন চোখে দেখে। ভিটেমাটি-ঘর বলতে কিছুই ছিল না। ঘর ভাড়া দিতে চায় না। প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলাম।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক ঘর পরিদর্শন ও সুবিদাভোগীদের খোঁজখবর নেন।

কুতুবা ৯ নং ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী রেনু বেগম, ছাগলা গ্রামের বিউটি, হাসান নগর ৩ নং ওয়ার্ডের আকলিমা, ৭ নং ওয়ার্ডের আয়ুব আলী, উদয়পুর গ্রামের সামসুল ইসলাম নয়য় বলেন, শেখের বেটি শেখ হাসিনা মাথা সুন্দর ঘর দিয়েছেন। বাকি জীবন এখানে কাটিয়ে দিতে পারব। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ। তার জন্য আমরা দোয়া করি।

টবগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ইতিমধ্যে আমার ইউনিয়নে ৪০টি ঘর করা হয়েছে। বর্তমানে (৪র্থ পর্যায়ে) ৩৬টি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান।

তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নটি মেঘনার তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙ্গন কবলিত অসহায় মানুষগুলোর স্থায়ী নিবাস হলো। বড় মানিকা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগ সভাপতি জসিম উদ্দিন হায়দার, কুতুবা ইউনিয়নের নাজমুল আহসান জোবায়ের, পক্ষিয়া ইউনিয়নের আলাউদ্দিন সর্দার, কাচিয়া ইউনিয়নের আব্দুর রব কাজি প্রধানমন্ত্রীর এ মহতি কাজের ধন্যবাদ জানান।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক বলেন, এটি মুজিববর্ষের একটি অসাধারণ ঘটনা। সারা দুনিয়াতে এটি প্রথম  এবং একমাত্র ঘটনা। একসঙ্গে বিনা পয়সায় এত ঘর করে দেওয়ার নজির আমার জানা নেই। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মাদার অব হিউম্যানিটি সারা দুনিয়াতে একটি নজির স্থাপন করলেন। এখানে দুটো উপকার হয়েছে। দখলদারমুক্ত হয়েছে এবং জনকল্যাণে সরকারি ভূমি ব্যবহার হচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে এই প্রথম বারের মতো ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবাগুলোর মধ্যে একই সঙ্গে এই বিপুল সংখ্যক গৃহ  হস্তান্তর করেছে। সরকার গৃহহীন মানুষের সমস্যা মোকাবেলায় কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তার ইঙ্গিত দেয়।

বোরহানউদ্দিন উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। প্রধানমন্ত্রী চান দেশে কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।

ইত্তেফাক/বিএএফ